বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ চালু হলে প্রযুক্তি, অর্থনীতি, ই-লার্নিং, শিল্প খাত এবং নারীর ক্ষমতায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্টারলিংক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে ইন্টারনেট সেবার দামও কমতে পারে। এ ব্যাপারে বিস্তর প্রতিবেদন করেছে ভয়েস অব আমেরিকা।
স্টারলিংক বাংলাদেশে চালু করার জন্য নেওয়া উদ্যোগ
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে এক ভিডিও আলোচনায় বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে কথা বলেন।
সেই সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসডিজির প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ এবং স্পেসএক্সের পক্ষ থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বাংলাদেশে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারীদের জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। সেটি এখন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্টারলিংকের মতো নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মূল সুবিধা হলো উচ্চগতির, তারবিহীন ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ। যা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা সম্ভব। বর্তমানে দেশের অনেক দ্বীপ, চর, পাহাড়ি এলাকা ও গভীর বনাঞ্চলে ফাইবার অপটিক ক্যাবল বা মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া কঠিন। এসব এলাকায় স্টারলিংক সহজেই ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে পারবে, যা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমানে প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে স্টারলিংক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি শিক্ষা, ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা ও ফ্রিল্যান্সিংসহ অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট সেবার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। সেখানে এসব সেবার দাম একেবারে প্রতিযোগিতামূলক দামে নামিয়ে আনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান সরকার বিনিয়োগ বান্ধব। সেখানে সরকার স্টারলিংকসহ টেক-জায়ান্ট কোম্পানিগুলোকে জায়গা দিতে প্রস্তুত। এই জন্য এর লাইসেন্সের যে বিধিবিধান আছে, সেইগুলোকে সহজ করা হয়েছে। লাইসেন্স ফী একেবারে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।’