তিনি ছিলেন 'সাইলেন্ট কিলার'


, আপডেট করা হয়েছে : 13-03-2025

তিনি ছিলেন 'সাইলেন্ট কিলার'

অনেক ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে ভক্তদের রোমাঞ্চিত সময় উপহার দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেসব এখন অতীত। আর কখনও রিয়াদকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাবে না। কোটি কোটি ভক্তদের হৃদয়ে 'সাইলেন্ট কিলার' হিসেবে জায়গা করে নেওয়া ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার নিয়েছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। গতকাল তিনি সামাজিক মাধ্যমে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণার সঙ্গে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটলো। 


জাতীয় দলের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহ পরিচিত ছিলেন তার ধীর-স্থির ব্যাটিংয়ের জন্য। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যার নজির দেখেছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। সেই ম্যাচটিতে ২২৫ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬৯ রানেই ৮ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে সেদিন মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ জয়ের পেছনে ভূমিকা রাখেন। এছাড়া ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বৈশ্বিক কোনো আসরে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষের সেই ম্যাচ এখনও ভুলে যাননি ভক্তরা। ১৩৮ বলে ১০৩ রানের ইনিংস। এ কারণে আরও একবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ধাক্কা খেতে হয়েছিল ইংলিশদের। বিশ্বকাপের ঐ আসরে ইংল্যান্ডের পরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেদিন ১২৩ বলে অপরাজিত ১২৮ রান করেছিলেন সাইলেন্ট কিলার।

 


ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া মাহমুদউল্লাহ ২০০০ সালে এসিসি অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে রাজধানী ঢাকায় এসেছিলেন। তার আগে নিজ শহরে হাতেখড়ি হয়েছিল ক্রিকেট নামক জনপ্রিয় খেলাতে। পেশাদার ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহর যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে। সে সময় ঘরের মাঠে তিনি অংশ নিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। পরের বছর অর্থাৎ ২০০৫ সালে বাংলাদেশ 'এ' দলের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহর অভিষেক হয়। ঐ বছর থেকেই নিয়মিত ক্লাব ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন মাহমুদউল্লাহ। ২০০৭ সালের ২৫ জুলাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি যাত্রা। দুবছর পর ২০০৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। 


এক সময়ে ভারতের ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে তুলনা করা হতো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। কিন্তু ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে আধুনিক ক্রিকেটে তার সমালোচনা হয়েছে বেশ তোড়জোরেই। জাতীয় দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অসংখ্যবার। কিন্তু নিজেকে শান্ত রেখেছেন সবসময়। মাঠের ক্রিকেটকেই উপভোগ করেছেন। সবসময় সৃষ্টিকর্তার ওপরে ভরসা রেখেছেন। কঠিন মুহূর্তেও ভেঙে পড়েননি তিনি। সেটি তার অনুজদেরও অনুপ্রেরণা দেয়। সকলে মাহমুদউল্লাহর পরিশ্রম ও ধৈর্য্যের প্রশংসা করেন। জাতীয় দল থেকে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বিদায় নিলেও ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোতে তাকে নিয়মিত দেখা যাবে। চলতি ঢাকা প্রিমিয়র ডিভিশন ক্রিকেট লিগে মাহমুদউল্লাহ খেলছেন মোহামেডানের হয়ে। তবে চোটের কারণে এই মুহূর্তে তিনি মাঠের বাইরে রয়েছেন।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার