নেতানিয়াহুর দাবি— ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে নালায় পাঠিয়েছি’


, আপডেট করা হয়েছে : 25-06-2025

নেতানিয়াহুর দাবি— ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে নালায় পাঠিয়েছি’

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর এক ভিডিও বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইসরাইল একটি ইতিহাস গড়া বিজয় অর্জন করেছে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকে থাকবে।


বুধবার (২৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।


তিনি বলেন, ইসরাইল দুটি অস্তিত্ব সংকটের হুমকি সরিয়ে ফেলেছে — একটি পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসের আশঙ্কা এবং অন্যটি ছিল ইরানের তৈরি ২০ হাজার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। যদি এখন আমরা পদক্ষেপ না নিতাম, ইসরাইলের ধ্বংস সন্নিকটে ছিল।


নেতানিয়াহু জানান, যুক্তরাষ্ট্রের যে হামলা ইরানের ওপর চালানো হয়েছে, সেটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।  এটি এসেছে তার এবং কৌশল বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমারের নেতৃত্বে চালানো কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ।  তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান, যারা ফর্ডো নামের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ধ্বংস করেছে।


নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইলের কখনও এমন বন্ধু হোয়াইট হাউজে ছিল না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের যৌথ কাজের জন্য।


তিনি আরও জানান, ইসরাইল ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কর্মসূচিকে ধ্বংস করেছে এবং ইরানি শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছে।


তার ভাষায়, আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে নালায় পাঠিয়ে দিয়েছি। ইরান যদি পুনরায় তা চালু করার চেষ্টা করে, আমরা একই শক্তি ও দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাব।


তিনি বলেন, আমি আবারও বলছি — ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। এখন, ইরানের পতিত অক্ষ ভেঙে দিয়ে আমরা মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরের অঞ্চলের জন্য একটি শান্তি ও সমৃদ্ধির অক্ষ তৈরি করব।


নেতানিয়াহু গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রসঙ্গও তোলেন সংক্ষেপে। বলেন, আমাদের হামাসকে পরাজিত করতে হবে এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে।


অন্যদিকে, নেতানিয়াহু যখন ট্রাম্পকে প্রশংসা করছেন, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইলের একতরফা হামলার বিষয়ে প্রকাশ্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন।


মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি খুশি না যে ইসরাইল এখন এই ধরনের কাজ করছে। সকালে ইরানের দিক থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল, যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তারপর ইসরাইল প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। এই লোকদের একটু শান্ত হওয়া উচিত। এটা হাস্যকর।


একটি সূত্র জানায়, এরপর ফোনালাপে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় সতর্ক করেন, যেন ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলেও ইসরাইল পাল্টা প্রতিক্রিয়া না জানায়।


ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পরে জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগেই ভোরে ইসরাইল তেহরানের কেন্দ্রে বড় ধরনের হামলা চালায়, যাতে শতাধিক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়।


যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে ইরান একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যার একটি বেয়ারশেভায় চারজন ইসরাইলি নাগরিককে হত্যা করে।


সকাল সাতটা ছয় মিনিটে ইরান আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, এবং দশটা পঁচিশ মিনিটে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। এগুলোর কোনোটিই বড় ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি — কিছু বাধাগ্রস্ত হয়েছে, কিছু খোলা জায়গায় পড়েছে।


এই লঙ্ঘনের জবাবে ইসরাইলি বিমান বাহিনী তেহরানের কাছে একটি রাডার ঘাঁটি ধ্বংস করে।


ট্রাম্প অবশ্য তার বক্তব্যে নিহত ইসরাইলি নাগরিকদের প্রসঙ্গ তোলেননি। এরপর তিনি নেদারল্যান্ডসে ন্যাটো সম্মেলনের উদ্দেশে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার