আদানির কাছে বাংলাদেশ সরকারের বকেয়া পরিশোধ সম্পন্ন


, আপডেট করা হয়েছে : 02-07-2025

আদানির কাছে বাংলাদেশ সরকারের বকেয়া পরিশোধ সম্পন্ন

ভারতের আদানি পাওয়ারের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিপরীতে বাংলাদেশের সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। জুন মাসে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে এককালীন ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে। ফলে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আদানির পাওনা ছিল এমন সব অর্থই ‘সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।


বুধবার (২ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, এই অর্থ আদানি পাওয়ার এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় এককালীন অর্থপ্রাপ্তি। আগে তারা প্রতিমাসে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পেত।


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বকেয়া বিল, বিলম্ব সুদ এবং অন্যান্য খরচসহ সব কিছু মিটিয়ে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ ও আদানি পাওয়ারের মধ্যকার আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি আর্থিক ও আইনি দিক থেকে এখন আবারও স্বাভাবিক হয়েছে। পাশাপাশি চুক্তি ঘিরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রশ্নগুলোরও সমাধান হয়েছে।


ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। সব পাওনা পরিশোধের পর এখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন দুইটি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ইউনিটই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী চালু থাকে।


চুক্তি অনুযায়ী, ৩০ জুনের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ করলে বিলম্ব ফি মওকুফ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশ সময়মতো পরিশোধ করায় সেই সুবিধা পেয়েছে। পাশাপাশি এখন থেকে বিল পরিশোধে নিয়মিততা আনতে সরকার ১৮০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ একটি এলসি খুলেছে এবং বাকি পাওনার জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিও দিয়েছে।


চলতি বছরের মে মাসে ইকোনমিক টাইমসের আরেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ তখন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা দিলীপ ঝা তখন জানান, ২০২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশ ১.২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। বিলম্বে পরিশোধের কারণে অতিরিক্ত ১৩৬ মিলিয়ন ডলার হিসেব করা হয়েছিল।


তবে আদানি পাওয়ারের প্রধান নির্বাহী এস.বি. খ্যালিয়া নিশ্চিত করেন, বকেয়া থাকলেও কখনোই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়নি। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে পাওনার পরিমাণ ৫০০ কোটি রুপি কমে এসেছে বলেও তিনি জানান।


এই অর্থনৈতিক নিশ্চয়তার পটভূমিতে ভারতের দিক থেকেও কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্প, যা আগে আদানির একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠানের অধীনে ছিল, সেটিকে এখন মূল কোম্পানির সাথেই একীভূত করা হয়েছে। এতে অপারেশন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার