শুধু লোভনীয় বেতনে ইটালি নেওয়ার কথা বলে নয়, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর নাম করেও হাতিয়ে নিতেন শত শত কোটি টাকা। এমন একটি চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃতের নাম জোসনা খাতুন (৩৫)। তিনি নড়াইল সদরের দলজিৎ পুরের মেহেদী হাসানের স্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় রাজধানীর কাফরুল থানাধীন ইব্রাহিম পুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি টিম।
গ্রেপ্তার জোসনা খাতুন গত ২ জুলাই ডিএমপির পল্টন থানায় দায়ের করা মামলার আসামি। ইতঃপূর্বে এ চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য মিলন মিয়াকে (৪২) গ্রেপ্তারপূর্বক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রথমে লোভনীয় বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা টাকার চুক্তি হয়। বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেওয়া হয় চুক্তির অর্থ। পরে ভিক্টিমকে ভুয়া ভিসা ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কখনো পাসপোর্ট আটকে রেখে হয়রানি করা হতো।
মামলার তদন্তে জানা যায়, ইতালিতে লোক পাঠানোর কথা বলে মিলন মিয়া প্রতারক চক্রের হয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক সংগ্রহ করতেন। বিদেশ যেতে আগ্রহী লোকদেরকে মূলত তারা টার্গেট করতেন। ফরিদপুর, নড়াইল নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের আরও বেশ কিছু জেলায় এ প্রতারক চক্রটির নেটওয়ার্ক রয়েছে।
এভাবে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রটি। প্রকৃত ভিসার বদলে দিয়েছে ভুয়া ভিসা। চক্রটির প্রতারণালব্ধ উক্ত অর্থ বেশকিছু অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রহণ করার তথ্য প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া ভুক্তভোগীদের পাসপোর্ট আটকে রেখে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে।
গ্রেপ্তার জোসনা খাতুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণার দায়ও স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্যও পাওয়া গেছে।
বর্তমানে ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডি, ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগ পরিচালনা করছে। গ্রেপ্তার জোসনাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ ও পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।