রাজশাহী পবায় জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ


, আপডেট করা হয়েছে : 26-09-2025

রাজশাহী পবায় জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং কেন্দ্র ঘোষিত ৫ দফা দাবিতে রাজশাহীর পবা উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নওহাটা কলেজ মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

সমাবেশকে ঘিরে দুপুর থেকেই কলেজ মোড় এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমবেত হতে থাকেন। ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। হাজারো নেতাকর্মীর ভিড়ে কলেজ মোড় জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

 

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর নায়েবে আমীর অ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন,“দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়, তাই সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া স্বৈরাচারী জুলুম ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।”

 

পবা উপজেলার জামায়াত মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাফেজ নূরুজ্জামানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন,“বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন ছাড়া বিকল্প নেই। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। পিআর ছাড়া নির্বাচন মানে দিনের ভোট রাতে করার প্রস্তুতি, যা জনগণ আর মেনে নেবে না।”

 

তিনি আরও বলেন,“বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণের শক্তির কাছে অতীতে সব স্বৈরাচার পরাজিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও এর ব্যতিক্রম হবে না।”

 

অধ্যাপক আজাদ অভিযোগ করে বলেন, দেশে দুর্নীতি, দমন-পীড়ন ও অন্যায়ের শাসন চলছে। ভিন্নমতের রাজনৈতিক কর্মীরা গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের শিকার হচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

 

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি তোলে ধরে। দাবিগুলো হলো— জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন, জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার, এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

 

নওহাটা পৌরসভার আমির মাওলানা সুজা উদ্দিন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের রাজশাহী মহানগর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল।

 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- পবা থানার আমিন মো. আজম আলী, মহানগরের নায়েবে আমির আবু মো. সেলিম, কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল হোসেন, কর্ণহার থানার আমির অধ্যাপক আবুল হোসেন, মহানগরের যুব বিভাগের সভাপতি মো. সালাউদ্দিন, নওহাটা পৌরসভার সহ- সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, হুজুরিপাড়া ইউনিয়নের আমীন মো. রাশেল রহমান লিটন, দর্শনপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা হাফেজ মামুন, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহকারী সেক্রেটারি হাফেজ খাইরুল ইসলাম, পবা থানার শিবির সভাপতি সাদিকুল ইসলাম।

 

এসময় জামায়াতের নেতারা বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে কোন সরকার দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারবে না। তারা দাবি করেন, স্বৈরাচারী শক্তির দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার করতে হবে।

 

সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন,“দেশে আজ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হাঁসফাঁস করছে। কর্মসংস্থানের সংকট ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। এই অচলাবস্থা কাটাতে হলে অবিলম্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন।”

  


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার