নাটোরের গুরুদাসপুরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ইতি খাতুনের (১৪) বাল্যবিয়ে বন্ধ করে বরকে দুই মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার নাজিরপুর নতুনপাড়া গ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ।
ইতি নাজিরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং গ্রামের শামসুল হকের মেয়ে। বর বাহারুল ইসলাম (২৫) কুমারখালী গ্রামের নবির উদ্দিনের ছেলে এবং পেশায় ব্যবসায়ী।
বিয়ে বাড়িতে প্যান্ডেল, গান-বাজনা ও ভোজ চলাকালীন সময়ে ইউএনও’র উপস্থিতিতে মুহূর্তেই থেমে যায় সব আয়োজন। বরকে ঘটনাস্থলে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ড দেওয়া হয়। কনের পরিবারকেও সতর্ক করা হয়।
ইতি খাতুন বলেন, “পড়াশোনা করতে চাই, কিন্তু মা–বাবা ও প্রতিবেশীদের চাপে বিয়েতে রাজি হতে হয়েছিল। ইউএনও এসে বিয়ে বন্ধ করায় আবার স্কুলে যেতে পারব, খুব ভালো লাগছে।”
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, ইতি পড়াশোনায় ভালো, খেলাধুলাতেও পারদর্শী। বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে তিনিও বিয়ে বন্ধে উদ্যোগ নেন। তিনি বলেন, এ ঘটনা শ্রেণিকক্ষে আলোচনা করা হবে যেন ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়।
ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ বলেন, “বাল্যবিয়ে কিশোরীদের জন্য বড় ঝুঁকি। অল্প বয়সে মা হতে গিয়ে অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে স্কুলভিত্তিক ক্যাম্পেইন চালানো হবে। আর যারা নিজের বাল্যবিয়ে রুখবে, তাদের পুরস্কৃতও করা হবে।”