মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ উদ্ভাবনের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমর এম ইয়াগি, যিনি ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।
বর্তমানে মার্কিন নাগরিক হলেও ওমর ইয়াগির জন্ম ১৯৬৫ সালে জর্ডানের আম্মানে, এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারে। দেশছাড়া হয়ে তার বাবা-মা জর্ডানে চলে গেলে সেখানেই তার শৈশব কাটে। মাত্র একটি কক্ষে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে থাকতে হতো তাদের। সে সময় চরম পানি সংকটের মধ্যে দিন কাটাতে হতো, প্রতি দুই সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টার জন্যই মিলত পানি।
এই অভিজ্ঞতাই ওমরকে পরবর্তীতে পানি সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী করে তোলে। তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি এখন পৃথিবীর নানা অঞ্চলে পানি সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবার অনুপ্রেরণায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ওমর। ইংরেজি ভালোভাবে না জানলেও ভর্তি হন একটি কলেজে। সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর রসায়নে পিএইচডি করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
২০২১ সালে সৌদি আরব ‘ভিশন ২০৩০’ কর্মসূচির আওতায় তাকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করে।
নোবেলজয়ী অন্য দুই বিজ্ঞানী হলেন—জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুসুমু কিতাগাওয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড রবসন। তারাও ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ হচ্ছে এক ধরনের নতুন পদার্থ কাঠামো, যা বিশাল পৃষ্ঠতল ও ছিদ্রযুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন গ্যাস বা তরল পদার্থ সংরক্ষণ, পরিশোধন ও পরিবহনসহ নানা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই উদ্ভাবনকে রসায়নের জগতে যুগান্তকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে।