অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৩১ দফা


, আপডেট করা হয়েছে : 04-11-2025

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৩১ দফা

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৩১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।


প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের কার্যকরী দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকা দরকার। ভোটকেন্দ্রে কেবলমাত্র সিল দেওয়ার গোপন কক্ষ ব্যতীত সারা দেশে সমগ্র কেন্দ্রে সিসিটিভির ব্যবস্থা রাখতে হবে।


ভোটকেন্দ্রের বাহিরে বড় স্ক্রিনের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের প্রতিনিধিদের প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমের প্রতিনিধি/সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোনো সরকারিচাকরিজীবী চাকরি ছাড়ার পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না—এমন আইন প্রণয়ন করতে হবে।

আরো বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে দলীয় মনোনয়ন ফরম ৫ হাজার টাকার অধিক মূল্যে বিক্রি করা যাবে না।


নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন ফরম পেতে ১০ হাজার টাকার বেশি গ্রহণ করা যাবে না। সিডি বা ভোটার তালিকা ক্রয় বাবদ কোনো ফি ধার্য করা যাবে না। পোস্টার বর্তমান প্রচলিত আইন অনুযায়ী হবে। তবে সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া দরকার।

নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদের সমন্বিত যৌথ প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে সব দলের সমান প্রচারের ব্যবস্থা থাকা দরকার। এআই কনটেন্টসহ সামাজিক গণমাধ্যমে অপতৎপরতা ও অপতথ্যের ব্যবহার ও প্রচার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।


 

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় বৃদ্ধি না করা। নির্বাচনের মনোনয়ন ফরমের সাথে হলফনামা জমা নিতে হবে।


নির্বাচন শেষে তিন মাসের মধ্যে হলফনামা যাচাই-বাছাই করতে হবে। অসামঞ্জস্য দেখলে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা থাকবে। রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার যথাসম্ভব নির্বাচন কমিশন থেকেই দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। পক্ষপাতদুষ্ট, বিতর্কিত কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো ব্যক্তি, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি বছর তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশন ও দুদকে জমা দেওয়ার বিধান রাখতে হবে। রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় সদস্য ছাড়া বাইরে থেকে কেবলমাত্র ৫ শতাংশ মনোনয়ন দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি কোনো সংগঠিত সংঘের, ক্লাবের বা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকেন তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

আরো বলা হয়েছে, যেকোনো পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তার নির্বাচনী এলাকার ভোটারের জনআস্থা হারালে তাকে রিকল করার বিধান রাখতে হবে। যেকোনো পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর তার নির্বাচনী এলাকার জনগণের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখতে হবে। অলাভজনক দায়িত্ব হিসাবে সংসদ সদস্যরা প্রধানত, আইন প্রণয়নের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। উন্নয়ন বরাদ্দে বা নানা প্রকল্পে তাদের যুক্ত থাকার বিধান বাতিল করতে হবে।


প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি বন্ধ করতে হবে। মন্ত্রীদের একাধিক গাড়ি দেওয়া যাবে না। হলফনামায় যদি ঢাকায় ফ্ল্যাট বা বাড়ি থাকে সেসব সাংসদ/মন্ত্রীর নামে সরকারি বাড়ি বরাদ্দ না দেওয়া। এমপি/মন্ত্রী কোনো স্কুল, কলেজ, মন্দির, মসজিদ, মাদরাসা, ক্লাব, সংঘ, সমিতি, গীর্জা ইত্যাদি ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানের কমিটির সর্বোচ্চ পদে অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি  মেয়র কেউ যাতায়াতের সময়ে জনগণের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটিয়ে প্রটোকলের নামে রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। দ্বৈত নাগরিকরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এবং ভোট প্রদান করতে পারবেন না। প্রবাসীদের ভোট প্রদানের উপযুক্ত ব্যবস্থা চালু করতে হবে। তিনশত আসনেই না ভোটের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। 




 

আরো বলা হয়েছে, নির্বাচনে টাকার খেলা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। সর্বোচ্চ ৫ জনের অধিক ব্যক্তি নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া যাবে না। নির্বাচনে কথিত 'শোডাউন' কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনে অদৃশ্য  অঢেল ব্যয় রোধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচনে সন্ত্রাস, গুন্ডামী, প্রশাসনিক ম্যানিপুলেশান, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় অনুভূতির রাজনৈতিক ব্যবহার রোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভোট প্রদানে যে কোনো ধরনের বাধাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করার প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বচ্ছ করতে হবে। গুরুতর অনিয়ম ও জ্বালিয়াতির কারণে নির্দিষ্ট কেন্দ্রের পাশাপাশি গোটা আসনের নির্বাচন বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা রাখতে হবে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার