প্রাথমিক শিক্ষকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ার শেল নিক্ষেপ


, আপডেট করা হয়েছে : 08-11-2025

প্রাথমিক শিক্ষকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ার শেল নিক্ষেপ

তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা রাজধানীতে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন।


শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।


পুলিশি বাধায় কয়েকজন শিক্ষক আহত হন এবং পদযাত্রা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। প্রাথমিকের শিক্ষক নেতা শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, তাদের শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।


এর আগে সকালে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। সকাল ৯টা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো শিক্ষক সেখানে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।


আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারি বিভিন্ন পদে সমমানের যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই দশম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন—যেমন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই), নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। অথচ সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১১তম গ্রেডে রয়েছেন। তাই দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের পর এবার তারা দশম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবিতে আবারও মাঠে নেমেছেন।


শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার শিক্ষক ইয়াছিন মিয়া বলেন, সরকারি গাড়িচালকরা পান ১২তম গ্রেডে বেতন, অথচ শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে। দেশে শিক্ষকদের এই অবমূল্যায়ন অগ্রহণযোগ্য।


শিক্ষকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকারের আশ্বাস বাস্তবে রূপ নেয়নি। কয়েক দফা আন্দোলনের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৭ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি বাস্তবায়ন না করে তা পাঠিয়ে দেয় নবগঠিত পে-কমিশনে। দুই মাস কেটে গেলেও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় শিক্ষক নেতারা পে-কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কমিশন জানায়, গ্রেড পরিবর্তনের এখতিয়ার তাদের নয়, এটি সার্ভিস কমিশনের বিষয়।


এ অবস্থায় শিক্ষকরা আবারও তাদের পুরোনো দাবি অর্থাৎ দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়টি সামনে এনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।


‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন অংশসহ চারটি সংগঠন এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। এছাড়াও ঢাকা–চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।


সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিগুলো হলো- ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার