রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে আবু তাহের নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁর বিরুদ্ধে হলে নির্যাতন, হুমকি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থীকে মতিহার থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আবু তাহের রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক সাহার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আবু তাহের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং হামলায় অংশ নেন। আন্দোলনের পর থেকে তিনিসহ অভিযুক্ত ছাত্রলীগের অন্য নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি গোপনে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন বিষয় প্রচার করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গতকাল পরীক্ষা শেষে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পথে কয়েকজন শিক্ষার্থী আবু তাহেরকে আটকান। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও দুজন থাকলেও তাঁরা পালিয়ে যান। পরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে কৈফিয়ত চান এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না বলে জানান। একপর্যায়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবু তাহেরকে উদ্ধার করে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘আবু তাহের ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই, তবে কর্মী হিসেবে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছেন। ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আমরা তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। পুলিশ আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, তাহের সম্প্রতি ফেসবুকে আওয়ামী লীগের একটি কর্মসূচি নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল।
নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা কিছু মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।