প্রায় অসম্ভব এক সমীকরণ থাকা চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হতাশ করে দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপে ফিরলো নরওয়ে। রোববার (১৬ নভেম্বর) রাতে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্বের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে নিজেদের মাঠে ইতালিকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে নরওয়ে। ভীষণ ছন্দে থাকা আর্লিং হালান্ডের জোড়া গোল এই দুর্দান্ত জয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
ইতালিকে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পেতে নয় গোলের বিশাল ব্যবধান রেখে জয় দরকার ছিল। প্রথমার্ধের শুরুতে পিও এসপোসিতোর গোলে দলটি এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে তারা আর জাল খুঁজে পায়নি, উল্টো হালান্ডদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে।
আট ম্যাচের সবকটিতে জিতে পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট নিয়ে এবারের বাছাই শেষ করেছে নরওয়ে, তারা আই গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইতালির পয়েন্ট ১৮। সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পেতে ব্যর্থ হলেও, সুযোগ এখনও শেষ হয়ে যায়নি তাদের। দলটিকে খেলতে হবে প্লে-অফে, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের মার্চে। বিস্ময় জাগিয়ে গত দুটি আসরের টিকিট পায়নি তারা, তাই টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছে আজ্জুরিরা।
প্লে-অফে খেলার অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয় ইতালির জন্য। ২০১৮ সালের আসরে প্লে-অফে সুইডেনের কাছে হেরে এবং সবশেষ ২০২২ সালের বিশ্বকাপে প্লে-অফের সেমিফাইনালে উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে পরাস্ত হওয়ায় তারা দর্শক হয়ে ছিল।
এই ম্যাচে ইতালির একমাত্র গোলদাতা একাদশ মিনিটে জাল কাঁপানো পিও এসপোসিতো। অন্যদিকে, ১৯৯৮ সালে শেষবার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নরওয়ের সবগুলো গোল আসে বিরতির পর। ম্যাচে লম্বা সময় ধরে নিজের ছায়া হয়ে থাকা হালান্ড হঠাৎ তেতে উঠে পরপর দুই মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন (৭৮ ও ৭৯তম মিনিটে)। তার আগে-পরে জাল খুঁজে নেন অ্যান্টোনিও নুসা (৬৩তম মিনিটে) ও ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লারসেন (শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ আগে)। বাছাইপর্বের আট ম্যাচে মোট ৩৭টি গোল করেছে নরওয়ে।
ম্যানচেস্টার সিটির স্ট্রাইকার হালান্ড সবগুলো ম্যাচেই জাল খুঁজে পেয়েছেন এবং সব মিলিয়ে ১৬টি গোল রয়েছে তার নামের পাশে। এতে তিনি ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন; ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ১৬টি গোল করেছিলেন পোল্যান্ডের রবার্ত লেভানদোভস্কিও।
নরওয়ে এর আগে তিনবার—১৯৩৮, ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ সালে—বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলেছে এবং ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায় তাদের সেরা সাফল্য ছিল ১৯৯৮ সালের আসরের শেষ ষোলোতে ওঠা।