বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনসমাগম যত বড়ই হোক, সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে হবে। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতা করা যাবে না।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন পর্যন্ত আয়োজিত এক স্বাগত মিছিল শেষে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে তার নেতৃত্বেই এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
রিজভী বলেন, “তারেক রহমান তার মাকে দেখে বাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত সবাইকে শৃঙ্খলার সঙ্গে অবস্থান করতে হবে। কেউ কোনো উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করবেন না।”
তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজ দেশ বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তার আগমন উপলক্ষ্যে সারা দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তাকে একনজর দেখার জন্য লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসছেন।
২০০৭ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার ছিল শেখ হাসিনারই সমর্থিত সরকার। সেই সময় বিনা কারণে তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং নির্মম শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। ওই নির্যাতনের পর তাকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়েছিল।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়। ১৭ বছর ধরে তাকে পরিবার, দেশ ও জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তিনি তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, এমনকি ছোট ভাইয়ের লাশ ও জানাজায়ও অংশ নিতে পারেননি। এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জিয়া পরিবার বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবার। এই পরিবারই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্ভীক সৈনিকের মতো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। এই পরিবারকে ধ্বংস করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা কোনো ষড়যন্ত্র বাদ দেয়নি।
তারেক রহমানের আগমন প্রসঙ্গে রিজভী জানান, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে অবতরণ করে বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে ৩০০ ফিট এলাকায় উপস্থিত জনসমাগমের উদ্দেশে একটি সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। এরপর তিনি তার মাকে দেখে বাসায় ফিরবেন।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা সরকারের কাছে তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি। সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দলীয়ভাবেও নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।”
এ সময় মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপির আইটি সেলের সদস্য মাহফুজ কবির মুক্তা প্রমুখ।