রাজশাহীর নওহাটায় জমে উঠছে পুরাতন মোটরসাইকেলের হাট


, আপডেট করা হয়েছে : 02-09-2022

রাজশাহীর নওহাটায় জমে উঠছে পুরাতন মোটরসাইকেলের হাট

ধান, সবজিসহ কৃষিফসল ও গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, সাইকেল, রিকশা, ভ্যান গাড়ির হাটের পাশাপাশি এবার রাজশাহীর নওহাটায় পুরাতন মোটরসাইকেল বিক্রির হাট বসেছে।

সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ক্রেতা ও বিক্রেতারদের উপস্থিতিতে ব্যাপক জমে উঠেছে পুরাতন মোটরসাইকেলের হাট। নওহাটা পৌর সবজি হাট সেডে দুপুর ২টা থেকে রাত পর্যন্ত হাটে বেচাকেনা চলে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থী এসে ভিড় জমায় এই হাটে।

শুধু রাজশাহী জেলা নয়, পাশের জেলা নওগাঁ, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা এই হাটে আসছেন তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি বিক্রি এবং চাহিদার মধ্যে থাকা পুরাতন মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য। এটিই হলো জেলার প্রথম ও বৃহত্তম পুরাতন মোটরসাইকেলের হাট।

বর্তমানে মোটরসাইকেল কেনা ও বিক্রি করার পেশায় জড়িয়ে রয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটরসাইকেল ক্রয় করে এই হাটে নিয়ে আসেন বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। আবার অনেক সময় হাট থেকেও মোটরসাইকেল কিনে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলটিও বিক্রি করতে এই হাটে আসেন অনেকে।

হাটে ব্যবহারযোগ্য প্রায় সবধরনের পুরাতন মোটরসাইকেল পাওয়া যায়। বিভিন্ন ব্রান্ডের ৫০ সিসির মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে সবধরনের মোটরসাইকেল এই হাটে উঠছে। হাট কর্তৃপক্ষ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সবধরনের সহযোগিতা করে থাকেন। বিক্রেতাদের মোটরসাইকেল হাটে তুলতে কোন খাজনা দিতে হয় না। গাড়ি বিক্রি হলে ক্রেতা ও বিক্রেতা মিলে গুনতে হয় ক্রেতা ৬’শ টাকা ও বিক্রেতা ৪শ’ টাকা খাজনা।

পুরাতন মোটরসাইকেলের হাট চালু হওয়ার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই সুবিধা ভোগ করছেন হাট পরিচালক আব্দুল বারিক জানিয়েছেন। তিনি জানান, বাইকের সব কাগজপত্র চেকসহ আসল কাগজপত্র এবং যাদের লাইসেন্স এখনো করা হয়নি তাদের ক্ষেত্রে শো-রুমের কাগজপত্র দেখা হয়। পাশাপাশি ইঞ্জিল ও চেসিস নম্বর ঠিক আছে কিনা তাও দেখা হয়।

কি কারণে এ হাটের উদ্যোগ গ্রহণ করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বারিক বলেন, আসলে পুরাতন মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েন। সব ধরনের মোটর বাইক এ হাটে তুলে বিক্রেতা তার চাহিদা মতো দাম যাচাই বাছাই করে সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে পারেন। এতে ক্রেতা বিক্রেতা কারোরই কোনো সংশয় থাকে না। তিনি জানান নতুন হাট হলেও প্রতি হাটবারে ৮-১০টি পুরাতন মোটরসাইকেল বেচা-কেনা হচ্ছে।

হাট কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, এ হাটে মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রি করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে বিক্রেতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, ১জন পরিচয় প্রদানকারী (তার ছবি ও আইডির ফটোকপি), গাড়ির সব কাগজপত্র, উভয়ের ফোন নাম্বার। অপরদিকে ক্রেতার ভোটার আইডির ফটোকপি, ফোন নাম্বার বাধ্যতামূলক থাকার কথা জানান।

স্থানীয় ডিএস দেওয়ান নামে এক যুবক বলেন, এটি পুরাতন বাইকের নতুন হাট। হাট পুরোদমে চালু হলে ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনের সুবিধা হবে।

সম্প্রতি প্রধান অতিথি থেকে এ হাটের উদ্বোধন করেন নওহাটা পৌর মেয়র ও পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হাফিজ।

তিনি বলেন, নওহাটা বাজার একটি ঐতিহ্যবাহি বাজার। এই বাজারে সব ধরনের পন্য সামগ্রী বেচা-কেনা হোক আমি চাই। নওহাটায় পুরাতন সাইকেল বেচা-কেনা হলেও পুরাতন মোটরসাইকেলের কোন হাট নেই। এই এলাকায় পুরাতন মোটরসাইকেল বেচা-কেনায় ক্রেতা-বিক্রেতারা বিপাকে পড়েন। অনেক সময়ে টাকা লেন দেন ও কাগজপত্রের বিড়ম্বনায় পড়েন ক্রয়-বিক্রেতারা। সেই হিসেবে পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে কেনা-বেচা করলে উভয়ই সুবিধা পাবে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার