মিকোলেইভ। ইউক্রেনের একটি বন্দর শহর। জাহাজের হর্ন আর বাতিঘরের ঘণ্টায় সরগরম থাকত এই শহর। সময়ের সঙ্গে হয়েছে শব্দের পালাবদল। আগের বিকট শব্দ রূপান্তরিত হয়েছে আতঙ্কে। অদূরেই শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ। বাজছে সাইরেন। অথচ রাস্তায় দেখা মিলল ভাবলেশহীন হয়ে থাকা কিছু মানুষের। প্রতিদিনের মতো পানির জন্য অপেক্ষমাণ তারা। গুলি বা সাইরেনের শব্দ এখন ত্রাস সৃষ্টিতে ব্যর্থ। বোমার ভয় তুচ্ছ। আগে দরকার পানি। রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে পানির লাইন বিপর্যস্ত হয়ে গেছে শহরটিতে।
বাসিন্দারা কেউ হেঁটে, কেউ গাড়িতে রেকি করছেন পানিবাহী ট্রাকের আশায়। তরুণী থেকে বৃদ্ধ। ৫ লিটার থেকে ৫০ লিটার। প্রয়োজনীয় পানি নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে শহরে ট্রাক খুঁজে বেরাচ্ছেন কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর। পানিবাহী ট্রাকের সঙ্গে সংযুক্ত পাইপ থেকে প্রতিদিন লাইন ধরে এভাবে খাবার পানি জোগাড় করতে হচ্ছে মিকোলেইভের বাসিন্দাদের। পানি আনতে জগ-মগ-বালতি-বোতল যে যেটা পারছেন সেটি সঙ্গে নিয়েই এসে দাঁড়িয়েছেন লাইনে। সংখ্যায় বয়োজৈষ্ঠরাই বেশি। মাঝে একজন তরুণকে দেখা গেল লাইনে। ২৭ বছর বয়সি ভ্যালেরি বারশেভ কর্মজীবনে একজন বেকার। সাম্প্রতিক সংকটের কথা জানতে চাইলে ভ্যালেরি বলেন, ‘চারজনের পরিবার আমার। চিন্তা করতে পারেন আমাদের ধুতে, রান্না করতে, চা বানাতে কী পরিমাণ পানি লাগে?’ সাইকেলে পানিতে ভরা জার রাখতে রাখতে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন আমার প্রায় ১২০ লিটার পানি সংগ্রহ করতে হয়।’ বেকারির স্বার্থে ব্যবহৃত পানি একই সঙ্গে সংগ্রহ করেন তিনি।