প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে রাশিয়া


, আপডেট করা হয়েছে : 25-09-2022

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে রাশিয়া

দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ পরিকল্পনার পথে এগোচ্ছে রাশিয়া। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২২-২৫ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে খরচ করবে ৩৪ লাখ কোটি রুবল (৬০ হাজার কোটি ডলার; এক রুবল সমান ৫৬.২৫ ডলার) খরচের পরিকল্পনা করছে মস্কো।

যা দেশটির প্রচলিত বাজেটের থেকে অনেক বেশি। প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যয় হবে এই অর্থ। রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাতে শুক্রবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

নতুন ব্যয়-পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই চার বছরে শুধু প্রতিরক্ষা খাতেই খরচ করবে ১৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি রুবল। এর মধ্যে চলতি বছর খরচ হবে ৪ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুবল।

আগের বাজেটে চলতি বছর প্রতিরক্ষা খাতে ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি রুবল খরচের পরিকল্পনা ছিল। আর ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১০ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন রুবল খরচ ধরা হয়েছিল।

তবে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা খাতের ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি রুবল খরচের পরিকল্পনা অপরিবর্তিত থাকছে। এদিকে ‘যারা পরমাণু অস্ত্র দিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে তাদের জানা উচিত যে বাতাসও তাদের দিকে ঘুরতে পারে।’

ইউক্রেন ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ হুমকির পর গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সারা বিশ্বেই। যদি সত্যিই হামলা চালায় তো কেমন হবে ইউক্রেন পরিস্থিতি?

এ নিয়ে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে এএফপি। তবে বিশ্লেষকরা নিশ্চিত নন যে ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জাপানে বোমা হামলার পুতিনই প্রথম পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে আগ্রহী হবেন।

রাশিয়ার পরমাণু আক্রমণ দেখতে কেমন হবে? বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো সম্ভবত এক বা একাধিক ‘কৌশলগত’ বা যুদ্ধক্ষেত্রে পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে।

এগুলো হলো ছোট অস্ত্র, সবচেয়ে বড় মার্কিন কৌশলগত ওয়ারহেডের ১.২ মেগাটন অথবা ১৯৬১ সালে রাশিয়া যে ৫৮ মেগাটন বোমা পরীক্ষা করেছিল। সে তুলনায় এই পরমাণু বোমাগুলো ০.৩ কিলোটন থেকে ১০০ কিলোটন বিস্ফোরক শক্তির হবে।

কৌশলগত বোমাগুলো আরও শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্র সর্বাত্মক যুদ্ধ জয়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কিন্তু ‘ছোট’ এবং ‘সীমিত’ এখানে আপেক্ষিক। যুক্তরাষ্ট্র হিরোশিমায় ১৯৪৫ সালে যে পরমাণু বোমা ফেলেছিল তা ধ্বংসাত্মক প্রভাব ছিল মাত্র ১৫ কিলোটন।

মস্কো কি লক্ষ্যবস্তু করবে? ইউক্রেনে পরমাণু বোমা হামলার ক্ষেত্রে রাশিয়ার লক্ষ্য হবে দেশটিকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। পশ্চিমা সমর্থকদের বিভক্ত করা।

ওয়াশিংটনে সিএসআইএস আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সামরিক বিশেষজ্ঞ মার্ক ক্যানসিয়ান বলেছেন, রাশিয়া সম্ভবত সামনের সারিতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না।

২০ মাইল (৩২ কিলোমিটার) অঞ্চল দখল করতে ২০টি ছোট পরমাণু বোমার প্রয়োজন হতে পারে, এটি বিশাল পরমাণু ঝুঁকির মধ্যে ছোট লাভ। তবে শুধু একটি ব্যবহার করাই যথেষ্ট হবে না বলেও জানান তিনি।

আরও শক্তিশালী বার্তা পাঠাতে পানির ওপর একটি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উল্লেখযোগ্য হতাহতের ঘটনা এড়াতে পারে। অথবা একটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালস তৈরি করতে ইউক্রেনের আকাশের অনেক উচ্চতায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অচল করে দিতে পারে। অথবা বৃহত্তর ধ্বংস এবং মৃত্যু বেছে নিতে পারেন পুতিন।

রাশিয়ার হাতে কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে? ‘ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টে’র মতে, রাশিয়ার হাতে ৫৯৭৭টি ‘নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড’ রয়েছে।

এই নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডগুলো ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় জুড়ে দিয়ে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো যায়। তবে, এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৫০০টি অত্যন্ত পুরোনো।

প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। ৪৫০০টি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট। বাকিগুলো স্বল্প-পরিসরে ব্যবহারের জন্য ছোট আকারের কম ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্র। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রায় ১৫০০ রুশ ওয়ারহেড বর্তমানে মোতায়েন রয়েছে।

অর্থাৎ বোমারু বিমান বা সাবমেরিনগুলোতে স্থাপন করা আছে। বর্তমানে বিশ্বের নয়টি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চিন, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরাইল।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার