দেউলিয়াত্বের খাতায় নাম লেখানো শ্রীলঙ্কা এবার দেশের জ্বালানির সংকট মেটাতে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। শিগগির শ্রীলঙ্কায় পৌঁছে যাচ্ছে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের চালান। চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন সরকার। তবে এখনো গ্যাসোলিন থেকে ডিজেল পর্যন্ত সব পণ্যের নাকাল পরিস্থিতি দেশটিতে। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের জ্বালানির সংকট মেটাতে হিমশিম খাওয়া নতুন সরকার এবার রাশিয়ার দিকে হাত বাড়ালো।
রাশিয়ার এই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সাপুগাসকান্দায় সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের শোধনাগারে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে বলে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুমিথ উইজেসিংঘ।
এর আগে এক টুইট বার্তায় শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী জানান, দেশের একমাত্র শোধনাগারটি ২৮ মে অপরিশোধিত তেল পেতে যাচ্ছে, যা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। সেটি এখন পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।
মস্কোর ইউক্রেনে আগ্রাসন গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে। অথচ এখনো যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। এদিকে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকা রাশিয়া জ্বালানি বিক্রির ইউরোপের বিকল্প উপায় এরইমধ্যে বের করেছে। শ্রীলঙ্কা হলো সর্বশেষ এশীয় দেশ যারা রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কিনছে। এর আগে ভারত ও চীন সস্তায় রাশিয়ার তেল কিনছে বলে খবর পাওয়া যায়।
উইজেসিংঘে বলেছেন, সাপুগাসকান্দা শোধনাগার সাইবেরিয়ান লাইট ক্রুড ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, আবুধাবির মুরবান এবং ইরানি লাইট অয়েলের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার শোধনাগার প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে পারে এমন কয়েকটি গ্রেডের অপরিশোধিত পণ্যগুলোর মধ্যে একটি। জানা গেছে, আগামী ছয়দিনের মধ্যে উৎপাদন শুরু করবে এই শোধনাগার।
যদিও তেল কেনার অর্থ কিভাবে শ্রীলঙ্কা পরিশোধ করবে সেই বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।
সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গের জাহাজ-ট্র্যাকিং ডেটা বলছে, সাইবেরিয়ান লাইটের একটি কার্গো বহনকারী জাহাজ নিসোস ডেলোস এর পয়েন্ট মুরিং-এ চলে গেছে যেখান থেকে এটি ছাড়তে পারে। গত ২৯ মার্চ নভোরোসিস্কের কৃষ্ণ সাগর বন্দরে লোড হয় এই কার্গো জাহাজ এবং এটি কোরাল এনার্জি নামে একজন ব্যবসায়ীর নামে তালিকাভুক্ত হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশছোঁয়া দামসহ নানা সমস্যার বেড়াজালে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।