রাজশাহীতে সকাল ৯ থেকেই উৎসব মুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সকাল সকাল ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেবার জন্য সারিবন্ধ ভাবে লাইনে দাঁড় হয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বেলা যত গড়িয়েছে ভোটারদের উপস্থিতি ততটাই বাড়তে দেখা গেছে। রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলার ভোট কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জেলা পরিষদের ভোট নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবে। এই জন্য রাজশাহী জেলায় ভোটার রয়েছে মাত্র ১ হাজার ১৮৫ জন। তবে ভোট সংখ্যা খুব কম হলেও ভোট কেন্দ্র ওকেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনি আমেজ বেশ উৎসব মুখর পরিবেশে হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন বা অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনের চাইতে প্রচার প্রচারণা বা নির্বাচনী পরিবেশ বেশ জাকজমপূর্ণ ভাবে দেখা গেছে।
বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে প্রার্থীদের পোষ্টার সু-সজ্জিত ভাবে টাঙ্গানো রয়েছে। সাধারণ জনগণ কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নিয়ে ভোট গ্রহনের আমেজ উপভোগ ও গল্পে মেতেছেন। চলছে হিসেবে নিকেশ কে হচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য। এছাড়া ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে প্রবেশ করছে হাস্যউজ্জ্বল মুখে।
আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মতে তারা সকাল থেকেই সু-সুজ্জিত হয়ে কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণের জন্য নিরাপত্তার বিষয়টি তারা কঠোর নজরদারি করছে।কেন্দ্র গুলোতে নির্বাচন কর্মকর্তারা, আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও ভোটে কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করছেন।
ভোট কেন্দ্রের বাইরে চা-পান, বিড়ি-সিগারেটসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর পসরা নিয়ে অতিরিক্ত দোকান বসতে দেখা গেছে। সবমিলিয়ে ভোটের একটি অন্যরকম নির্বাচনী আমেজ তৈরী হয়েছে।
এই ভোটে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা একে অন্যের উপর ভোটারদের চাপ দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপে ভোট প্রদানের চাপেরও অভিযোগ তুলছে।
তবে জেলা রিটানিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আমি আমার অফিস থেকে সকল কেন্দ্রের ভোট সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করছি। এখন পর্যন্ত সুষ্ঠ ভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। সুষ্ঠ ভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করা যায় ভোট গ্রহণ সুন্দর ভাবেই শেষ হবে।
রাজশাহীর নয়টি ভোট কেন্দ্রের ১৮টি বুথে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
যেকোনো সহিংসতা এড়াতে মাঠে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। মনিটরিং করতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সাথে ৪টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। সেইসাথে ৯টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজ নিজ উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন।
একজন চেয়ারম্যান, তিনটি সংরক্ষিত নারী সদস্য ও নয়টি সাধারণ সদস্য পদের বিপরিতে রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৭ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩০ জন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও দলীয় মনোনিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান আখতার, বীর মুক্তিযোদ্ধ আনোয়ার ইকবাল ও আফজাল হোসেন।
রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১ হাজার ১৮৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯০৬ জন ও নারী ভোটার ২৭৯ জন।
রাজশাহীর নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভোটার বাগমারায় ২৩৭ জন। এছাড়াও গোদাগাড়ীতে ভোটার সংখ্যা ১৪৬ জন, তানোরে ১২০ জন, পবা উপজেলায় ও সিটি করপোরেশনে ১৭৪ জন, মোহনপুরে ৯৪ জন, দুর্গাপুরে ১০৬ জন, পুঠিয়ায় ৯৪ জন, চারঘাটে ৯৪ জন ও বাঘা উপজেলায় ১২০ জন ভোটার।