আবার ফিরছেন নেতানিয়াহু


, আপডেট করা হয়েছে : 02-11-2022

আবার ফিরছেন নেতানিয়াহু

স্থিতিশীল সরকার গঠনে ব্যর্থ ইসরাইলে চার বছরের কম সময়ে পঞ্চমবারের মতো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। রব উঠেছে মঙ্গলবারের এই নির্বাচনের মাধ্যমে ফের ক্ষমতায় ফিরছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ভোট শেষ হওয়ার আগেই এবারে নির্বাচনে নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থি দলের সফলতার কথা জানিয়েছে বিশ্লেষকরা। জনমত জরিপ অনুসারে, ১২০ আসনের পার্লামেন্টে ষাটটির বেশি আসন পেতে পারে নেতানিয়াহুর জোট। ইতোমধ্যেই সরকার গঠনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী দলে রূপ নিয়েছে তার দল। লিকুদ ছাড়াও জোটে রয়েছে কট্টরপন্থি শাসক ও ইউনাইটেড তোরাহ জুদায়িজম। ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় সকাল ৭টায়। শেষ হওয়ার কথা রাত ১০টা পর্যন্ত। দিনের শুরুতে জেরুজালেমের একটি কেন্দে ভোট দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও লিকুদের প্রধান বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ভোট শেষে তিনি বলেন, ‘আমি একটু চিন্তিত। তবে আশা করি আমরাই শেষ হাসি হাসব।’ ইসরাইলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির তথ্য অনুযায়ী দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৮.৪ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। ১৯৯৯ সালের নির্বাচনের পর সর্বোচ্চ ভোটদান। ২০২১ সালের নির্বাচনের তুলনায় এবারের ভোটার উপস্থিতি বেশি। আগের নির্বাচনে এই হার ছিল ২৫.৪ শতাংশ।

ইসরাইলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকেই। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকে নির্বাচনের চক্রে আটকে আছে দেশটি। তার বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীরা একজোট হলেও, তার অনুগতদের সমর্থন টলানো যায়নি। সমালোচকদের ধারণা তিনি ক্ষমতায় ফিরে এলে শাস্তি এড়াতে ইসরাইলের বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবেন। মূলত চরম ডানপন্থি ও কট্টর ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলো তাকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সমর্থন দেওয়ায়, এই চতুর রাজনীতিক সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার সম্ভাবনাই বেশি।

নেতানিয়াহুর বিপরীতে রয়েছেন সাবেক টেলিভিশন উপস্থাপক এবং অর্থমন্ত্রী ৫৮ বছর বয়সি লাপিদ। তার ‘দেয়ার ইজ আ ফিউচার’ দলটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তবে তার জোটটি নেতানিয়াহুর জোটের চেয়ে কিছুটা দুর্বল। এমনকি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যানট্জ এর ‘জায়োনিস্ট ইউনিয়ন’ দলটি নেতানিয়াহু বা লাপিদের দলের চাইতে অনেক কম আসন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বাইরে রয়েছেন ইতামার বেন-গেভির। তিনি একজন চরম জাতীয়তাবাদী আইনপ্রণেতা, যিনি হয়তো নেতানিয়াহুকে ক্ষমতায় বসাতে পারেন। তার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী উনকানি দেওয়া এবং ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের কালোতালিকাভুক্ত এক গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থনের প্রমাণিত অভিযোগ থাকলেও, তিনি এখন আরও পরিপক্ব হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

দেশটির এক-পঞ্চমাংশ আরব সংখ্যালঘু মানুষের অনেকেই ফিলিস্তিনি হিসাবে বা তাদের পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। ফলে ভোটার উপস্থিতি কম হলে তা নেতানিয়াহুকে পরিষ্কার বিজয় এনে দিতে পারে। কিন্তু উপস্থিতি বেশি হলে তা যাবে লাপিদের পক্ষে, কারণ তার বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোটটিতে ইসরাইলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি আরব দল অন্তর্ভুক্ত ছিল। হারেৎজ পত্রিকার রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়োসি ভার্টার বলেন, নির্বাচনে নেতানিয়াহুর দল ভালো অবস্থায় রয়েছে। যেহেতু ক্ষমতায় যেতে ৬১টি আসন দরকার সে ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর জোট এর বেশি আসন পাবে। তার জয় হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে ইসরাইলের ক্ষমতায় ছিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শেষ চার নির্বাচনেও সর্বোচ্চ আসন পেয়েছিল তার দল লিকুদ পার্টি। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন করতে পারেননি তারা।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার