কাজে আসছে না ৮ কোটি টাকার সেতু


, আপডেট করা হয়েছে : 19-11-2022

কাজে আসছে না ৮ কোটি টাকার সেতু

মেহেরপুরের গাংনীতে সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো উপকারের আসছে না মানুষের। সেতু নির্মাণের আগে স্থানীয়রা সংযোগ সড়কের জন্য জমি দিতে আগ্রহী হয়েছিলেন। কিন্তু জমির দাম পাবেন না জেনে তারা এখন বেঁকে বসেছেন। প্রায় ছয় মাস আগে উপজেলার মাথাভাঙা নদীর মধুগাড়ি ঘাটসংলগ্ন সেতুটি নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না করে ফেলে রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বামন্দী এইচডি থেকে প্রাগপুর জিসি ভায়া মধুগাড়ি ঘাট সড়কের মাথাভাঙা নদীর ওপর এ গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়। ব্যয় ধরা হয় সাত কোটি ২৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৯ টাকা। সেতুটি নির্মাণের ফলে দুই জেলাবাসীর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও শিক্ষাসহ নানা সুবিধা পাওয়ার কথা। এখন সংযোগ সড়কের জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিদাতাদের দাবি, ন্যায্য মূল্য দিতে হবে। এলজিইডি বলছে, বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর অংশে সংযোগ সড়ক তৈরি হলেও গাংনী অংশে হয়নি। ফলে সেতু নির্মাণ হলেও মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। বর্তমানে নদের দু’পারের মাঠে চাষাবাদ ও ফসল তোলা, চিকিৎসাসহ নানা কারণে যাতায়াতে মানুষকে ৯ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের আগে এখানে নৌকা চলত। এখন নৌকাও চলে না।

গাংনীর মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজা হোসেন ও মিথিলা সাথি জানায়, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই থানার শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। সংযোগ সড়ক না হওয়ায় দৌলতপুরের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

দৌলতপুরের মথুরাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী জানান, তিনি গাংনীতে ২০ বছর ব্যবসা করছেন। আগে নৌকায় আসতেন। সেতু নির্মাণ হওয়ার পর আর নৌকা চলে না। আবার সেতুর সংযোগ সড়কও নেই। এখন গাংনী এলাকায় আসতে ৭-৮ কিলোমিটার ঘুরতে হয়।

গাংনীর সবজি চাষি ও ব্যবসায়ী মোমিনুল হক জানান, নদীর এপার-ওপার দুই দিকেই জমি আছে। এতে উৎপাদিত সবজি দুই উপজেলার হাটে বিক্রি হয়। যখন সেতু ছিল না, নৌকায় যাতায়াত করতেন। এখন তাও পারছেন না। সবজিবোঝাই ভ্যানগাড়ি আট কিলোমিটার ঘুরে আসতে হচ্ছে। এতে খরচ ও ভোগান্তি দুটোই বেড়েছে।

সংযোগ সড়কের জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া জামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা জানি জমির দাম বিধান মতো দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে বিনামূল্যে জমি দিতে হবে। ন্যায্যমূল্য পেলে সেতুর সড়কের জন্য জমি দিতে আমাদের আপত্তি নেই।

গাংনী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, সেতু নির্মাণের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে গেলে যারা জমি দিতে চেয়েছিলেন তারা আপত্তি জানাচ্ছেন। তারা বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দাম চাইছেন। তাই ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ-সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান জানান, তিনি জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আইন অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেবেন।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার