বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) নির্ভর চারটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এগুলো উৎপাদনে এলে জাতীয় গ্রিডে আরও প্রায় ২৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে। এতে উৎপাদন সক্ষমতা আরও বাড়বে বলে মনে করে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। নির্মাণাধীন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে তিনটির অগ্রগতি বেশ ভালো। চলতি বছরের যে কোনো সময় এগুলোতে উৎপাদন শুরু হতে পারে।
নির্মাণাধীন চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে ভারতীয় কোম্পানি রিলায়েন্সের ৭১৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, সামিট পাওয়ারের মেঘনাঘাট-২ এর ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের মেঘনাঘাট ৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, এবং আনোয়ারার ৫৯০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এলএনজি পাওয়ারনির্ভর করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর তারিখ (সিওডি) নির্ধারণ করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রিলায়েন্সের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮১ শতাংশ। সামিট মেঘনা ঘাট-২ এর ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি প্রায় ৬৭ শতাংশ, মেঘনাঘাট কেন্দ্রটির ভৌত অগ্রগতি ৬১ দশমিক ২০ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৫৭ শতাংশ। এ ছাড়া আনোয়ারার কেন্দ্রটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১১ শতাংশ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন আগে সবচেয়ে সস্তা ছিল। কিন্তু সারা দুনিয়ায় এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বদলেছে। এখন এলএনজি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। এ কারণে সরকার অনেক এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করেছে। তবে বেসরকারি খাতের চারটি কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রা এলাকায় এলএনজিনির্ভর ৩৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ জন্য জমি বরাদ্দ ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজও শেষ হয়। তবে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে যৌথ মালিকানায় বড় আকারের দুটি এবং সরকারিভাবে আরও সাতটি এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।