ড. ওয়াহিদ ও খালেদার নেতৃত্বে দুই কমিটি


, আপডেট করা হয়েছে : 30-01-2023

ড. ওয়াহিদ ও খালেদার নেতৃত্বে দুই কমিটি

পাঠ্যবইয়ের ভুলত্রুটি এবং এর দায় নিরূপণে দুটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর একটি পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য বিকৃতি ও ধর্মীয় উসকানিসহ বিতর্কিত অন্যান্য বিষয় চিহ্নিত করে তা সংশোধনের সুপারিশ করবে। এই কমিটির প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. ওয়াহিদুজ্জামান। অপর কমিটি পাঠ্যবইয়ের ভুল ও বিতর্ক উসকে দিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কারও ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত তৎপরতা আছে কিনা তা তদন্ত করবে। এই কমিটির প্রধান হিসাবে কাজ করবেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-১) খালেদা আক্তার। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোববার বিকালে উভয় কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একটি কমিটিতে ৫ জন এবং আরেকটিতে ৭ জন সদস্য আছেন। এরমধ্যে পাঠ্যবইয়ে ভুল অনুসন্ধান সংক্রান্ত কমিটিকে ১ মাস আর এই ভুলের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা সংক্রান্ত কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। তিনি বলেন, অনুমোদিত কমিটি কাল (আজ) প্রকাশ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে রোববার ড. ওয়াহিদুজ্জামান ও খালেদা আক্তারের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করা হয়। ড. জামান যুগান্তরকে বলেন, এনসিটিবির পাঠ্যবই সংক্রান্ত কোনো কমিটিতে আমাকে রাখা হয়েছে কিনা তা আমাকে জানানো হয়নি। আর খালেদা আক্তার বলেন, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি। তাই কতদিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে এবং কমিটিতে আমার সঙ্গে সদস্য হিসাবে কে কে আছেন তা জানি না।

তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামানের কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর-এর অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম ও বিএএফ শাহীন কলেজের শিক্ষক আবদুল মান্নান আছেন। অপর কমিটিতে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ অন্যরা আছেন।

২৪ জানুয়ারি রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী এই দুই কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওইদিন তিনি বলেন, ‘কমিটির সদস্যদের নাম রোববার ঘোষণা করা হবে। তিনি জানান, একটি কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করা হবে-যেখানে স্বাস্থ্য, ধর্মীয় ও পেশাগত বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। কমিটির কাছে যে কেউ যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে পাঠ্যবই সংশোধন করবে। এছাড়া কারও কোনো অস্বস্তি থাকলে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। এই কমিটিই পাঠ্যবইয়ে ভুলত্রুটি আর বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে কাজ করবে।’ আর এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামানকে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অন্য কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, এনসিটিবির প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন। পাঠ্যবইয়ে ভুলত্রুটি ও বিতর্ক ওঠা বিষয়গুলো কেউ ইচ্ছাকৃত যুক্ত করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।’ এই কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার।

অপপ্রচারের জবাবে পালটা ভিডিও : এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবির ওয়েবসাইটে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন পাঠ্যপুস্তকের যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক উঠেছে সেগুলোর জবাব সংবলিত ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। ভিডিওগুলোর একটিতে বানর বা শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের সৃষ্টি সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সমালোচনা হচ্ছে সেটির জবাব আছে। এছাড়া ভালুকের দাড়ি ছাঁচা, নারীর পর্দা, নারী নেতৃত্ব, সমকামিতা ইত্যাদি সমালোচনা প্রসঙ্গেও ভিডিও দেওয়া হয়েছে। ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার