কিছু ছবি হাজারও মানুষকে কাঁদায়। ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার আগে যেন ছবি-ই ঘটনার কথা বলে। এমন-ই হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক একটি ছবি তুলেছেন রয়টার্সের ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাস।
আবদুল আলিম মুয়াইনির সেই ছবিটি নাড়া দিচ্ছে সবাইকে। স্ত্রী-সন্তানদের মরদেহের পাশে নিজের নিরুপায় হয়ে বেঁচে থাকার যে যন্ত্রণা তা দেয়ালচাপা পড়ে আঘাত পাওয়ার চেয়ে বেশি যন্ত্রণার, ছবিটি সে কথাই বলছে।
রয়টার্সের ওই ফটোগ্রাফারের ছবির বর্ণনায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, হাতায়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে একজনের নিথর দেহ। পাশেই হাত উঁচু করে সাহায্য প্রার্থনা করছেন এক ব্যক্তি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ান বংশোদ্ভূত আবদুল আলিম গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া থেকে পালিয়ে তুরস্কে আসেন। তুরস্কে তিনি ইসরা নামে এক তুর্কি নারীকে বিয়ে করেন। তাদের মাহসেন ও বিসিরা নামে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। ভূমিকম্পে দেয়ালের স্ল্যাব ধসে তার স্ত্রী মারা গেছেন। আর স্ল্যাবে পা আটকে স্ত্রীর পাশেই উদ্ধারের অপেক্ষায় ছিলেন আবদুল আলিম। জ্ঞান থাকলেও বাম চোখে আঘাত পাওয়ায় তা খুলতে কষ্ট হচ্ছে তার।
ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাস আবদুল আলিমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে না পারলেও তার দুই বন্ধু বিস্তারিত জানিয়ে বলেছেন, আবদুল আলিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। তার চিকিৎসা প্রয়োজন।
তবে বাঁচানো যায়নি তার পরিবারকে। মাটিতে কম্বলে মোড়ানো আছে তিনটি দেহ- ইসরা, মাহসেন, বিসিরার।
স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আর রয়টার্স বলছে, সরকারি তথ্যানুযায়ী— বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তুরস্কে ১২ হাজার ৩৯১ জন এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৯৯২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে এখন মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ জনে।