এস কে সিনহার সম্পদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ


, আপডেট করা হয়েছে : 28-02-2023

এস কে সিনহার সম্পদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে)  সিনহার বাংলাদেশে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাড়ি ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আবেদন করেন। 

শুনানি শেষে মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আসাদুজ্জামান আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত এসব সম্পদ জব্দ থাকবে। আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক এনামুল হক এই আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সম্পদ জব্দের আদেশটি সবার অবগতির জন্য দেশের বহুল প্রচারিত একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকাসহ সরকারি অফিসিয়াল গেজেটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদেশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক ও সচিবের কাছে পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

জানা গেছে, অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ১৪ ধারার অধীনে দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতে পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশনে উলে­খ করা হয়েছে, মামলার তদন্তের স্বার্থে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও অনন্ত কুমার সিনহার বিদেশে যে স্থাবর সম্পদ/ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তা সংযুক্ত/ফ্রিজ করা প্রয়োজন। 
পিটিশনের সঙ্গে এ সংক্রান্ত নথিপত্র আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, দুদকের মামলায় অভিযুক্ত অনন্ত কুমার সিনহা ও সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অবৈধ উপায় অবলম্বন করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে দেশ-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধের অর্থ পাচার করেছেন। এই পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন। 

জানা গেছে, অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও অনন্ত কুমার সিনহার দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ থাকবে। আদালতের আদেশে জব্দ করা সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের বিবরণও দেওয়া হয়েছে। অস্থাবর সম্পদ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্যক্তিগত চেকিং অ্যাকাউন্ট (নম্বর ১৩৩১৭৮০৬৮০) সিটিজেন ব্যাংকের বোস্টন, ম্যাসাচুয়েটস শাখায় খোলা হয় ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ। একই ব্যাংকে একইদিন আরেকটি সেফ ডিপোজিট (নম্বর ০১০১০০৭২০০০৩৪১১২২) বক্স খোলা হয়েছে। এছাড়া অনন্ত কুমার সিনহার হিসাব (নম্বর ৮৫৮০৩৩৭৫) খোলা হয়েছে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে। ১৭৯, জ্যাস্পার স্ট্রিট, প্যাটারসন, নিউ জাসির্র ০৭৫২২, বাড়িটি রয়েছে জব্দ তালিকায়।

প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে প্রায় চার বছরের অনুসন্ধান শেষে গত বছরের অক্টোবর মাসে মামলা করে দুদক। মামলায় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে তা স্থানান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোট ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা সম্পদ অর্জন করে ভাই ও আত্মীয়ের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন। এ সম্পদ অর্জনের বৈধ কোনো উৎস নেই এবং তা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। 


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার