জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে টুঙ্গিপাড়া যাবেন তারা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শোভাবর্ধন এবং জাতীয় শিশু সমাবেশ ও তিন দিনব্যাপী বইমেলা আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তাদের আগমনকে নির্বিঘ্ন করতে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত শতাধিক তোরণ, ডিজিটাল পোস্টার ও ব্যানার টাঙিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।
ওইদিন সকালে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ও পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছাবেন। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী সমাধিসৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন।
এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ছেড়ে যাবেন।
রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন।বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান, অস্বচ্ছল মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক অনুদান বিতরণ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। তিনি শিশু শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করবেন।
দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শিশু শিল্পীদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেবেন এবং দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বইমেলার উদ্বোধন ও স্টল পরিদর্শন করবেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শেষে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রিয় নেত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষ্যে টুঙ্গিপাড়ায় স্বাগত জানানোর জন্য সমস্ত রাস্তাঘাটে ব্যানার-ফেস্টুন এবং দলীয় কার্যক্রম চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সফর সার্থক করার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রথমে টুঙ্গিপাড়ায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরে রাষ্ট্রপতি আসবেন। রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানাবেন। পরে রাষ্ট্রপতি প্রথমে জাতির পিতার সমাধিসৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে রাষ্ট্রপতি চলে যাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন এবং সেখানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী দুপুরের খাবার খেয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জে আসবেন। গোপালগঞ্জের সব স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সারা গোপালগঞ্জ রঙিন সাজে সেজেছে। ব্যানার-ফেস্টুনে ভরে গেছে। শুধু আমাদের নেতাকর্মী নয়, গোপালগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে ‘শুভ শুভ দিন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন’ খচিত তোরণ ও প্ল্যাকার্ডে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত করে বিভিন্ন সড়কে টাঙানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ১৭ মার্চ জাতির পিতার ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব। এই অনুষ্ঠানটিতে আলোচনাসভা এবং গোপালগঞ্জের স্থানীয় শিশু শিল্পীদের অংশগ্রহণে আলেখ্য অনুষ্ঠান (ছবি, অঙ্কিত, চিত্রপট, রচনা, প্রবন্ধ) এবং তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী হবে।