এবার চিত্রনায়ক শাকিব খানকে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। নায়কের কাছে একটি আইটি নোটিশ পাঠিয়ে এ আলটিমেটাম দেন তিনি।
রহমত উল্ল্যাহ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া আছেন। কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে সেখানে ফিরে গেছেন তিনি। ঢাকায় তার পক্ষে আইনি বিষয়টি দেখভাল করছেন অ্যাডভোকেট ড. মো. তবারাক হোসেন ভুঁইয়া। তার স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশ শাকিবের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।
তবারাক হোসেন ভুঁইয়ার চেম্বার জুরিসকনসাল্টস অ্যান্ড লিগ্যাল সল্যুশনের (জেএলএস) জুনিয়র অ্যাসোসিয়েটস ও মুখপাত্র তামান্না বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে নোটিশটি শাকিব খানের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নোটিশে ৩ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যদি তিনি কোনো সাড়া না দেন, তাহলে আমাদের ক্লায়েন্টের (রহমত উল্ল্যাহ) সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে আইনি নোটিশের কপি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেছেন রহমত উল্ল্যাহ। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘অভিনেতা শাকিব খানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রথম ধাপ এটি। যেহেতু বিষয়টি আইনি পদক্ষেপ পর্যন্ত গড়িয়েছে, তাই এই ব্যাপারে আপাতত আর কোনো বক্তব্য আমি দেব না। এখন থেকে এই বিষয়ে যে কোনো ধরনের বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটা আমার বিজ্ঞ আইনজীবী দেবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার চিত্রায়ণের সময় শাকিব খানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়, শুটের সময় শাকিবকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, আর তা না হলে তার হোটেল কক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো। বিষয়টি ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। এসব যৌনকর্মীর মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক আমাদেরই দিতে হতো।
সহপ্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগ এনে অস্ট্রেলিয়ায় একটি মামলাও করা হয়, যার মামলা নম্বর: NSW Police reference no: E ৬২৪৯৪৯৫৯।
সেই ঘটনার সূত্র ধরে অভিযোগে রহমত উল্ল্যাহ আরও বলেন, একবার তিনি আমাদের একজন নারী সহপ্রযোজককে কৌশলে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী ওই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এ ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি ও কুৎসার শিকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
‘ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের ও তার পরিবারে টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওই দিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেই দিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান। এর পর থেকে শাকিবের সঙ্গে বিভিন্ন সময় যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরে ২০১৮ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় এলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।’
এ ছাড়া চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনে শাকিবের বিরুদ্ধে এসবের লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন রহমত উল্ল্যাহ।