দাম কমাতে মাংস আমদানি করতে চায় এফবিসিসিআই


, আপডেট করা হয়েছে : 25-03-2023

দাম কমাতে মাংস আমদানি করতে চায় এফবিসিসিআই

দেশে মাংসের দাম কমাতে আগামী ২/১ মাসের জন্য মাংস আমদানির অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে আয়োজিত পণ্যসামগ্রীর মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি  মো. জসীম উদ্দিন। সভায় এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি আমীন হেলালী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তবে মুরগি ব্যবসায়ীদের ডাকা হলেও তারা সভায় আসেননি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কয়েকদিন ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম অনেক বেড়েছে। এর আগে ডিমের দাম বাড়লো। তখন ধর-পাকড় করা হলে দাম কমে আসে। এখন রমজানকে সামনে রেখে আবার মুরগির দাম বাড়ানো হলো কেন? এভাবে সমাধান আসবে না। 
গরুর মাংসের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, দুবাইয়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা। কিন্তু দুবাইয়ে গরু উৎপাদন হয় না। তারা আমদানি করে যদি ৫০০ টাকা দিতে পারে তাহলে আমরা উৎপাদন করে কেন ৭৫০ টাকায় কিনবো। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্রয়লার মুরগি এখন ২৮০ টাকা।

এখন যদি সরকার মনে করে আমদানি করলে দাম কম পড়বে, তাহলে আমদানি করবে।
তিনি বলেন, ব্রয়লার মুরগির যদি উৎপাদন খরচ বেশি হয়, তাহলে সরকার স্বল্প সময়ের জন্য মাংস আমদানির অনুমতি দিতে পারে। যাতে দাম কমে যায়। আমরা সরকারের কাছে আমদানি উন্মুক্ত করে দিতে বলবো। আগামী দু-তিন মাস আমদানি করা হোক। এ ছাড়া আমরা আর কোনো পথ দেখছি না।


এফ‌বি‌সি‌সিআই সভাপ‌তি জানান, এখন গরু ও পোল্ট্রির দাম অস্বাভা‌বিকভাবে বেড়েছে। দে‌শীয় এ খাত বাঁচাতে এতদিন মাংস আমদা‌নি বন্ধ ছিল। এখন য‌দি তারা স‌ঠিক মূল্যে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগি দিতে না পারে তাহলে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলবো, বাজার ঠিক রাখতে আমদানির অনুমতি দেয়ার জন্য। মানুষ যদি ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে না পারে, তাহলে ইন্ডাস্ট্রির কথা চিন্তা করে লাভ নেই।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যাটি আমাদের জানাবেন। আমাদের সেলে জানান, আমরা কথা বলবো। আমাদের টিমও বাজার মনিটরিংয়ে থাকবে। আশা করবো আপনারা কেউ বেশি মুনাফা করবেন না। বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি খেজুর আছে। পর্যাপ্ত রয়েছে ছোলা, পামঅয়েল, সয়াবিনসহ অন্যান্য পণ্য।


জসীম উদ্দিন বলেন, ভোজ্য তেল, চিনি, পিয়াজ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের আমদানি, মজুত ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ৩ লাখ টনের বেশি চিনি রয়েছে, ভোজ্য তেলও চাহিদার তুলনায় বেশি মজুত আছে। নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই। তিনি বলেন, বৈশ্বিক কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্য বাড়লে ব্যবসায়ীদের কিছু করার থাকে না। তবে অবৈধভাবে কেউ যেন দাম বৃদ্ধি না করে, আমরাও সে বিষয়টি মনিটরিং করবো। কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে দাম বাড়ালে সংশ্লিষ্ট বণিক সমিতিকে সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা না করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই বণিক সমিতির লাইসেন্স বাতিল করবে। একই সঙ্গে দাম বেশি নেয়া প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে। এ ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সরকারকে সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই না, রোজায় কোনো ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল হোক, কাউকে আটক করা হোক। বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য ভোক্তাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রয়োজন। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পণ্য কিনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না।


সভায় সিটি গ্রুপের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ বলেন, আমাদের কাছে চিনি- ভোজ্য তেলের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে রোজায় কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না।
এ সময় কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান অভিযোগ করেন, সরকার বিভিন্ন নিত্যপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করায় বাজার প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে না। অবৈধ মুনাফা রোধে বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করা জরুরি। এর জন্য নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান তিনি।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার