সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস পেয়ে খুশি ক্রেতারা


, আপডেট করা হয়েছে : 27-03-2023

সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস পেয়ে খুশি ক্রেতারা

দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের দুর্ভাবনা কাটছেই না। রমজান ঘিরে পণ্যের দাম এখন আরও চড়া। বিশেষত, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য কিনতে বাজারে গিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ছে ক্রেতাদের। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় সীমিত আয়ের মানুষেরা। তবে রমজানে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম রোজা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে ২৮ রোজা পর্যন্ত। রমজান মাসে কম দামে এসব পণ্য পেয়ে খুশি ক্রেতারা।




তারা বলছেন, বাজারে মাংস, দুধ, ডিমের যে দাম সে তুলনায় এখানে অনেকটা কম। ফলে সামর্থ্যের মধ্যে এসব পণ্য কেনা সম্ভব হচ্ছে। তবে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গতবারের তুলনায় দাম বাড়ানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বলছেন তারা।



সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে সচিবালয়ের পাশে আবদুল গণি রোডে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।


পাশের এলাকা থেকে কেনাকাটা করতে আসা মো. শরীফ বলেন, আমার এলাকায় এই বিক্রয়কেন্দ্র নেই। তাই এখানে এসেছি। আমি এখান থেকে মুরগির মাংস, গরুর মাংস আর ডিম নিলাম। বর্তমানে বাজারে যে দাম আমাদের জন্য সেটা কেনা খুব কঠিন, সেই হিসাবে সুলভ মূল্যে পণ্য পেয়ে আমাদের বেশ সুবিধা হচ্ছে।




রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করা আবুল হাসেম জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাসা সিদ্দিকবাজার। আমি গতকালও এখান থেকে বাজার করেছি। আজ মুরগির মাংস এক কেজি, দুধ দুই লিটার ও এক ডজন ডিম নিলাম। বাজারের চেয়ে এখানে দাম অনেক কম। এতে আমাদের খুব উপকার হচ্ছে। সারাদেশে এই কার্যক্রম আরও বাড়ানো উচিত।




সকাল ৯টায় নির্ধারিত স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র থাকার কথা থাকলেও বরাবরের মতো আজও বিলম্বে পৌঁছেছে গাড়ি। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত সকালে ড্রেসিং করে মুরগিগুলো আনা হয়। আর খামারিদের কাছ থেকে ডিমগুলো পাওয়া যায় সকালে। সব পণ্য সংগ্রহ করে তা গাড়িতে লোড করতে সময় লাগে। এছাড়া সড়কে যানজটও থাকে। এসব কারণে সবসময় সঠিক সময়ে পৌঁছানো যায় না।


আবদুল গণি রোডের বিক্রয়কেন্দ্রের বিক্রয়কর্মী শহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমরা আজ একটু বিলম্বে পৌঁছেছি। সড়কে যানজট আছে, আর মাল লোড হতেও সময় লাগে। আমরা ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমাদের এখানে দুপুর দুইটা-আড়াইটার মধ্যে সব পণ্য বিক্রি হয়ে যায়। আমরা লাইন সিরিয়াল করে পণ্য বিক্রি করছি।




ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের গাড়ির চালক হৃদয় জাগো নিউজকে বলেন, একজন ব্যক্তি এখান থেকে সর্বোচ্চ এক কেজি গরুর মাংস, এক কেজি খাসির মাংস, এক কেজি মুরগির মাংস, এক ডজন ডিম, এক লিটার দুধ নিতে পারছেন। প্রতিদিন আমরা গরুর মাংস ১০০ কেজি, খাসি ৪০-৫০ কেজি, মুরগি ৫০ কেজি, ১২০০ পিস ডিম ও দেড়শো লিটার দুধ নিয়ে আসি।



রাজধানীর নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি, খামারবাড়ি, আজিমপুর মাতৃসদন, গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি, ৬০ ফুট রোড, খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গণি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ, রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বছিলা, হাজারীবাগ (সেকশন), লুকাস মোড় (নাখালপাড়া), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা) এবং কামরাঙ্গীর চর এলাকায় সুলভ মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।




এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে।


প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার