ইভিএম নয়, সংসদ নির্বাচন ব্যালটেই


, আপডেট করা হয়েছে : 04-04-2023

ইভিএম নয়, সংসদ নির্বাচন ব্যালটেই

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নয়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ভোট ব্যালট পেপারে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, কমিশন সভায় পর্যালোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত। ইসি সচিব বলেন, ইভিএম কেনা ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়া, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য না থাকায় কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রসঙ্গতে, চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এ বছরের নভেম্বরে।


রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে গতকাল সোমবার কমিশনের ১৭তম সভা শেষে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাঙ্গীর আলম। কমিশন সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়।
এ দিকে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন। সংলাপে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে কী কী করা যায় সেই পরামর্শ চাওয়া হয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। সংলাপে দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাতে সাড়া দেয়নি ১১টি। সংলাপে অংশ নেয়া দলগুলো সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ইভিএমে ভোট নেয়ার বিষয়েও ভিন্ন মত দেয়। তবে বেশির ভাগ দলই ইভিএমে ভোট না করতে নির্বাচন কমিশনকে জানায়। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটভুক্ত কয়েকটি দল ইভিএমে ভোটে আপত্তি নেই বলে অভিমত জানায়। এমন পরিস্থিতিতেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ইভিএমে ভোট করার চিন্তাভাবনা ছিল নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইভিএমে করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম কেনা ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়া, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য না থাকায় আগামী নির্বাচনে ইভিএম বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।


আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন করে ইভিএম কিনতে সরকারের কাছে প্রথমে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ চেয়ে পায়নি নির্বাচন কমিশন। তাদের দেয়া ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন দেয়নি পরিকল্পনা কমিশন। পরে ইসির হাতে থাকা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রয়োজনীয় মেরামতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী এক হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাইলেও অসম্মতি জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। তাদের এই প্রস্তাবও ভণ্ডুল হয়ে যায়।
নির্বাচন কমিশন সচিবকে চিঠি দিয়ে তাদের অবস্থান জানায় অর্থ বিভাগ। ওই টাকা দিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম আগামী নির্বাচনের জন্য মেরামত করতে চেয়েছিল ইসি। তবে ইসির এমন চাহিদার বিপরীতে ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়, যে কারণে পরিকল্পনা ছিল স্বল্প পরিসরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ১৭তম সভায় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
এ দিকে গত মাসে অবশ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, ‘ইসির যে সক্ষমতা রয়েছে, তাতে আগামী সংসদ নির্বাচনে ৫০ থেকে ৮০টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে নির্বাচন করা সম্ভব হবে। তবে ইসি সচিব বিষয়টি নিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন এবার। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ভোট হবে ব্যালটে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার