ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বল্পমূল্যে সব ধরনের মেডিক্যাল টেস্ট-সেবাসহ বসছে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র। যেখানে জরুরি সব প্রাথমিক চিকিৎসা মিলবে। সার্জারি ছাড়া সব ধরনের টেস্ট করা যাবে এই ক্লিনিকে। মূলত চিকিৎসাসেবায় প্রাইভেট মেডিক্যালে যারা খরচ বহন করতে পারেন না, তাদের কথা চিন্তা করেই এই সেন্টার করার উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন।
এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কোরিয়ায় সাধারণত মানুষ প্রথমে হাসপাতালে যায় না, তারা আগে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে যায়। তারপর এখান থেকে রেফার করলে তারা অন্য কোনো হাসপাতালে যায়। সেই ধারণা থেকেই ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫৪টি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র বা কমিউনিটি ক্লিনিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে রোগী যাবে রেফারেল হাসপাতালে, যেটি হবে মহাখালী হাসপাতাল। এই হাসপাতালকেও আরো আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হবে। যাতে কম খরচে উন্নত ও আধুনিক সেবা পায় নগরবাসী। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে সরাসরি কোরিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র কীভাবে পরিচালিত হয় তা পরিদর্শন করেন মেয়র। এছাড়া কী কী সেবা থাকবে এই সেন্টারে, সে বিষয়েও একাধিক বৈঠক করেন তিনি।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ইসিজি, এক্সরে, সিবিসি, টিবি , ডেঙ্গু, কিডনি, লিভার, ব্লাড, আরবিএস, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, প্রোস্টেট ক্যানসার টেস্ট, ব্রেস্ট ক্যানসারসহ সব ধরনের টেস্টের ব্যবস্থা থাকবে এখানে। এছাড়া নারীদের জন্য আলাদা মাতৃত্বকালীন চিকিৎসারও ব্যবস্থা রাখার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। এই মেডিক্যালে যারা চিকিৎসা নেবেন, তাদের আলাদা কার্ড দেওয়া হবে। এছাড়া তাদের মেডিক্যাল হিস্ট্রিও সংরক্ষণ করা হবে।
সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলোতে জায়গার সংকটের কারণে এসব এলাকায় মোবাইল ক্লিনিক স্থাপন করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেখানে কয়েক জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বসবেন। এছাড়া সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আধুনিক সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। নামমাত্র মূল্যে এসব সেবা নিতে পারবেন নগরবাসী। এই ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে বিদেশি অর্থায়নে, যাতে খরচ হবে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে দুইভাবে ভাগ করে নতুন ও পুরাতন ওয়ার্ডে কীভাবে এই ক্লিনিক স্থাপন করা যায়, সে বিষয়ে সমভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নেই কোনো সরকারি হাসপাতাল বা প্রাইমারি ক্লিনিক সেন্টার। তাই এই ওয়ার্ডগুলোর স্বাস্থ্যসেবা কীভাবে আরো কার্যকর করা যায়, সেটিও অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। কোরিয়ায় নগর সরকারের অধীনে পরিচালিত হয় এসব ক্লিনিক। বিশেষ করে এক জন জনপ্রতিনিধি এসব দেখভাল করেন। এছাড়া নগরে কোনো হাসপাতাল হলে সেটি নগর সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয়। নগর সরকার অনুমতি দিলে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে। উত্তর সিটি করপোরেশন এটি নির্মাণ করার পর এটি অন্য কোনো এনজিও বা প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালনা করার কথা ভাবছে। যাতে ন্যূনতম ফির মাধ্যমে সবাই সঠিক ও নির্ভুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেবা পেতে পারে।