এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের দুজন নারী বিজ্ঞানী। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী ও অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সাময়িকী ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’ এ তালিকা তৈরি করেছে। এই সাময়িকী ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর এশিয়ার শীর্ষ শত বিজ্ঞানীর তালিকা প্রকাশ করছে। সম্প্রতি ২০২৩ সালের তালিকা প্রকাশ করে সাময়িকীটি।
এ তালিকায় থাকা গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী প্লাস্টিকের দূষণ এবং প্রকৃতি ও মানুষের জীবনে এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে একাধিক গবেষণা করেছেন। জলজ প্রতিবেশ এবং বিপন্ন প্রাণী সুরক্ষায় অবদানের জন্য তিনি ওডব্লিউএসডি-এলসিভিয়ার ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড পান ২০২২ সালে। উপকূলীয় নারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছেন তিনি। ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী জুওলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সদস্য।
আরেক বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক। তিনিই প্রথম বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের জিন নকশা উন্মোচন করেছেন। তবে এর আগে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ কাজ ছিল শিশুদের নিয়ে। তিনিই বিশ্বে প্রথম প্রমাণ করেন, চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শুধু রক্ত নয়, শিশুর মস্তিষ্কেও বিস্তার লাভ করতে পারে।
দুই বিজ্ঞানীর সঙ্গেই আজ রোববার কথা হয় প্রথম আলোর। গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো স্বীকৃতি নতুন দায়িত্ববোধ তৈরি করে। আমি এ তালিকায় স্থান পেয়ে সম্মানিত বোধ করছি।’
শত বিজ্ঞানীর মধ্যে দুজনই নারী বিজ্ঞানীর স্থান পাওয়ার সংবাদ ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরীর কাছে বড় খুশির। তিনি বলেন, নারীরা যেকোনো কাজে বেশি মনেযোগী হন। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে অনেক বেশি সচেষ্ট থাকেন। তাঁরা যদি ভালো সুযোগ পান, তাহলে তাঁদের দিয়ে অনেক বড় অর্জন সম্ভব।
তবে বিজ্ঞান গবেষণায় তহবিল একটা বড় সমস্যা বলে মনে করেন এই বিজ্ঞানী। নারীদের জন্যও এ পথ খুব মসৃণ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব প্রতিবন্ধকতা নিয়েই বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন—বিশ্বের কাছে এমন বার্তা যাবে বলে মনে করেন সেঁজুতি সাহা। তিনি বলেন, ‘তালিকায় দুজনই নারী। এটা আমাকে আপ্লুত করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বার্তা বয়ে আনবে। বিজ্ঞানের কাজে আরও নারী এগিয়ে আসবেন।’
এশিয়ান সায়েন্টিস্ট ২০১১ সাল থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে মোট ১৭টি ক্যাটাগরিতে এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকা প্রকাশ করছে সাময়িকীটি।