ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ভারতের গুজরাটে শক্ত আঘাত হেনেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। অন্যদিকে পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি) জানিয়েছে, পাকিস্তানে এর প্রভাব খুবই মৃদু। এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি শক্ত আঘাত হানেনি। উঁচু ঢেউ সিন্ধের কেটি বন্দরে আঘাত হানলেও তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি ‘অতি শক্তিশালী’ থেকে ‘শক্তিশালী’ রূপ নিয়ে রাজাস্থানের দিকে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজস্থানের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় দুর্বল নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভারতের গুজরাটে অন্তত ২২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৯৯টি ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজও অনেক ট্রেনই বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইএমডি জানিয়েছে, গুজরাটের জাখাও বন্দরে বিপর্যয় আঘাত হানার সময় বাতাসের গতি ১২৫-১৪০ কিলোমিটারের মধ্য ছিল। তবে রাত আড়াইটার পর বাতাসের গতি ১০০-১১০ কিলোমিটারে নেমে আসে।
প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ঝড়ে ৫২৪টি গাছ উল্টে গেছে। ৯৪০টি গ্রাম বিদ্যুদ্বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভবনগর জেলায় আটকে পড়া ছাগলকে বাঁচাতে গিয়ে এক খামারি ও তাঁর ছেলে নিহত হয়েছেন। ৯৯ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গুজরাট রাজ্য সরকার।
কেন্দ্র সরকারের ১৮টি, গুজরাট রাজ্য সরকারে ১২টি, রাজ্যের সড়ক ও ভবন নির্মাণ বিভাগের ১১৫টি এবং বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি দল উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে কাজ করছে। এদিকে গুজরাটের জামালনগর বিমানবন্দরে আজ শুক্রবারের সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আঘাত হানার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৩০ কিলোমিটার। এ সময় সমুদ্রপৃষ্ঠের ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ২০-২৫ ফুট।
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ভারত-পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে দেড় লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ভারত-পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে দেড় লাখ মানুষ
এদিকে পাকিস্তানের কেটি বন্দরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্তও ঘূর্ণিঝড়টি প্রবলভাবে আঘাত হানেনি বলে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে।
আইএমডির বরাত দিয়ে পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শেরি রেহমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি পাকিস্তান থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এখনো পাকিস্তানের কোনো এলাকায় আঘাত হানেনি। তবে মাঝরাতের পর আাঘাত হানতে পারে। সবাই নিরাপদে থাকুন।’
এদিকে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ থেকে ৮০ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে সিন্ধে আরও একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিন্ধের মুখ্যমন্ত্রী করাচি ও হায়দ্রাবাদ প্রশাসনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।