বিশ্বের সব শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর


, আপডেট করা হয়েছে : 17-06-2023

বিশ্বের সব শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্বব্যাপী সব শিশুকে মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষার জন্য তাদের টিকাদান নিশ্চিত করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত জিএভিআই’র ‘গ্লোবাল ভ্যাকসিন ইমপ্যাক্ট কনফারেন্স : রেইজিং জেনারেশন ইমিউনিটি’তে এক ভিডিও ভাষণে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সব শিশু যাতে মারাত্মক সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের টিকা পায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’  


টিকাকে বিশ্বের শিশুদের জন্য একটি সুন্দর উপহার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ‘জেনারেশন ইমিউনিটি’ বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সম্মেলন সমর্থন করেন। তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন তৈরি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে জিএভিআই’র এই সহায়তাকে চমৎকারভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রাথমিক টিকাদানের কভারেজ ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করেছে।’


‘আমাদের ভ্যাকসিন পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনীর একটি প্রশিক্ষিত পুল রয়েছে’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় ৮০ শতাংশ তহবিল হাম, পোলিও ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে নতুন ভ্যাকসিনের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে।’


সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বছরে একটি জাতীয় টিকা দিবস পালন করে। আমাদের সরকার ন্যায় ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে জাতীয় টিকা নীতি প্রণয়ন করেছে।’


বাংলাদেশ ও জিএভিআই’র মধ্যে ২০০১ সালে শুরু হওয়া অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিএভিআইর সহায়তায় বাংলাদেশ এখন জরায়ু ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এইচপিভি ভ্যাকসিন চালু করেছে।’


সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা কলেরা ভ্যাকসিন নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছি এবং আমাদের অভিজ্ঞতা অন্যন্য দেশে পৌঁছে দিয়েছি।’


কোভিড-১৯ চলাকালে প্রধানমন্ত্রী কোভিড (করোনা) ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক জনসাধারণের পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, নতুন আন্তর্জাতিক মহামারি চুক্তি, সেই আহ্বানকে প্রতিফলিত করবে।’


শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে কার্যকর মহামারি ভ্যাকসিনের বিকাশ ও উৎপাদন করতে সহায়তা করছি। আমরা টিকা উদ্ভাবনের বিষয়ে জিএভিআইর সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রস্তুত আছি।’


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য জিএভিআই’র সহায়তার কথা স্মরণ করেন।


শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০০৯ ও ২০১২ সালে জিএভিআই অ্যালায়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বলে তিনি গর্বিত। সরকারপ্রধান বলেন, “আমি ২০১৯ সালে জিএভিআইর ‘ভ্যাকসিন হিরো’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়াকে সম্মানের বিষয় বলে মনে করি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে—আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য আমাদের দেশকে নিরাপদ, টেকসই ও সমৃদ্ধ করা।’

শেখ হাসিনা আশা করেন, টিকায় প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের বাঁচাতে বাংলাদেশের প্রতি জিএভিআই সমর্থন অব্যাহত রাখবে।  

প্রধানমন্ত্রী এই গ্লোবাল ভ্যাকসিন ইমপ্যাক্ট কনফারেন্স আয়োজনের জন্য স্পেন সরকার ও জিএভিআইকে ধন্যবাদ জানান।

গ্লোবাল ভ্যাকসিন ইমপ্যাক্ট কনফারেন্স জিএভিআই’র বর্তমান কৌশলগত সময়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। স্পেন সরকারের সহ-আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক থেকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সুযোগ গ্রহণের জন্য টিকা প্রতিরোধযোগ্য রোগগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের অগ্রগতি ও কৌশল বিকাশের জন্য বিশ্ব নেতাদের এবং টিকাদান বিশেষজ্ঞদের আহ্বান জানানো হয়।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার