হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যুক্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন সুড়ঙ্গপথ। আশকোনা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১ হাজার ৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের আন্ডারপাস তৈরি করা হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু হবে আগামী মাসে। দুই বছর পর ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা।
ভূগর্ভস্থ এ পথটি বিদেশিসহ সবার চলাচলের উপযোগী মানে নির্মাণ করা হবে। বিশেষ করে হজযাত্রীরা আশকোনা ক্যাম্প থেকে খুব সহজেই বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারবেন। এ ছাড়া বিমানবন্দর রেলস্টেশন, বিআরটি স্টেশন, বিমানবন্দরের সব টার্মিনাল ব্যবহারকারী যাত্রী এবং পথচারী পারাপার এবং পণ্য পরিবহনে আন্ডারপাসটি ব্যবহার হবে। এটি অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি আনবে।আপাতত কোনো বিদেশি ঋণ ছাড়া সরকারের নিজস্ব উৎস থেকেই ব্যয় জোগান দেওয়া হবে। তবে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ঋণ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। সময়মতো প্রকল্পটির কাজ শেষ করার উদ্দেশ্যে গত বছরই প্রাথমিক নকশা অনুমোদন এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করা হয়। আন্ডারপাসটির প্রস্থ
হবে কোনো অংশে ১২ মিটার ও কোনো অংশে ৯ মিটার। উচ্চতা হবে ৭ দশমিক ৬ থেকে ৬ দশমিক ১ মিটার।
প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদনে সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। নির্বাহক সংস্থা হিসেবে এতে সহযোগিতা দিচ্ছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ ডিপিপি যাচাই করেছে। জানতে চাইলে এ বিভাগের সদস্য সরকারের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া সমকালকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের সুফল পাবে দেশবাসী। প্রকল্পটির অবস্থানের কারণে বিআরটি, এমআরটি, রেল কর্তৃপক্ষসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল। তাদের সবার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে কমিশনের। সব পক্ষই প্রয়োজনীয় সেবা এবং সহযোগিতা দেবে। জনভোগান্তির কথা মাথায় রেখে তিন বছরের স্থলে দুই বছরের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরের সামনের মহাসড়ক পারাপার হন প্রতি ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭৭৭ যাত্রী ও পথচারী। এখানে একটি মাত্র ফুট ওভারব্রিজ পারাপারে ভরসা। সড়ক, রেল এবং বিমানের যাত্রীরা প্রায়ই দুর্ভোগে পড়েন। প্রবীণ, নারী, শিশু ও বিশেষ চাহিদসম্পন্ন ব্যক্তিদের দুর্ভোগ বেশি হয়। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্ডারপাসটি নির্মাণের নির্দেশ দেন। প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় রেলের নতুন ট্র্যাক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এ ছাড়া চালু হবে বিআরটি। এসব বিবেচনায় এখানে আন্ডারপাস নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।