১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৯:৩০:১৯ অপরাহ্ন
আখাউড়া-আগরতলা রেল উদ্বোধনের অপেক্ষায়
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৯-২০২৩
আখাউড়া-আগরতলা রেল উদ্বোধনের অপেক্ষায়

আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প বাংলাদেশের আখাউড়াকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এর মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে ট্রেন। এখন অপেক্ষা উদ্বোধনের। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত বিশেষ করে ত্রিপুরার বাসিন্দারা এই রেলপথ চালুর অপেক্ষা করছেন দীর্ঘদিন ধরে।


উদ্বোধনের পর আখাউড়া থেকে আগরতলা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন। সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রেন যাবে কলকাতা ও ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত অঞ্চলে। এতে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানির নতুন দুয়ার খুলে যাবে। তবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও শুরু হবে পরে।


বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্ব) প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিঞা জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। শুধু ইমিগ্রেশন ভবনের কিছু কাজ বাকি আছে। এগুলো কিছু দিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। প্রথমে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। রেলপথে পণ্য পরিবহন নিরাপদ হওয়ায় বাড়বে বাণিজ্য। আমদানি খরচ কমে যাওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে কম মূল্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে পণ্য।


 


এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, পণ্যের দাম অনেকটাই পরিবহন খরচের ওপর নির্ভর করে। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে ট্রেনে পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কম হবে। এতে করে আমদানিকৃত পণ্য দেশের বাজারে কম দামে সরবরাহ করা যাবে।


জানা যায়, বর্তমানে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি হচ্ছে না। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিচ্ছেন কম। রেলপথটি চালু হলে সড়কপথের তুলনায় কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। আখাউড়া থেকে ভারতের ত্রিপুরার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত আন্তদেশীয় রেলরুটটির দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশ ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। বাকি চার কিলোমিটার আগরতলা অংশে। বর্তমানে রেলপথে আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার, যা পাড়ি দিতে সময় লাগে ৩৮ ঘণ্টার মতো। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হলে কলকাতার সঙ্গে আগরতলার দূরত্ব কমে যাবে ১০৫০ কিলোমিটার। আখাউড়া হয়ে কলকাতা যেতে আগরতলাবাসীকে পাড়ি দিতে হবে অর্ধেক পথ বা ৫৫০ কিলো রেলপথ। সময় লাগবে মাত্র ১০ ঘণ্টা। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।


আখাউড়া থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।


শেয়ার করুন