ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুককে ফুলের রশি দিয়ে গাড়ি টেনে বিদায় জানানো হয়েছে। আর ডিএমপির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) হাবিবুর রহমান।
শনিবার বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি সদর দপ্তরে বিদায়ী কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন হাবিবুর রহমান। গোলাম ফারুক আজ থেকে অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে (এলপিআর) যাচ্ছেন।
রীতি অনুযায়ী বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুককে ফুলের রশি দিয়ে গাড়ি টেনে বিদায় জানান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিদায়ী কমিশনার। ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শুক্রবার বিদায়ী সংবর্ধনায় ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গোলাম ফারুক বলেন, ডিএমপি টিম হিসেবে মহানগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে যেভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে আগামী দিনগুলোতেও নতুন কমিশনারকে সেভাবে সহযোগিতা করবেন।
পুলিশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ডিএমপি। পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটির অন্যতম সম্মানজনক পদ ডিএমপি কমিশনার, যা পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিটও। এই পদে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার নাম আলোচনায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিয়োগ পেয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান। গত ২০ সেপ্টেম্বর তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
হাবিবুর রহমান বিসিএস ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি ডিএমপি সদরদপ্তরের ডিসি, ঢাকা জেলার এসপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং পুলিশ সদরদপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে ১৯৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন হাবিবুর রহমান। কর্মক্ষেত্রে সততা, সাহসিকতা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন বার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও দুই বার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন তিনি। পেশাগত কাজের বাইরে লেখালেখিসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা।
২০১৮ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে একটি বই সম্পাদনা করেন হাবিবুর। যার নাম দেন ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’।
বেদে জনগোষ্ঠী ছাড়াও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার যৌনকর্মী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়েও কাজ করেছেন হাবিবুর রহমান। দৌলতদিয়ার যৌনপল্লির শিশুদের জন্যও কাজ শুরু করেছেন তিনি, সেখানে গড়ে তুলেছেন উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশন। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে টেলিকম ভবনে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর গড়াতেও তার ভূমিকা রয়েছে।