১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার, ০৩:৪০:১৯ পূর্বাহ্ন
ছাত্রীকে ওড়না ছাড়া দেখতে চান অধ্যক্ষ! কলেজের গেটে স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে মানববন্ধন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৯-২০২৫
ছাত্রীকে ওড়না ছাড়া দেখতে চান অধ্যক্ষ! কলেজের গেটে স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে মানববন্ধন

নওগাঁ সরকারি কলেজে অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যক্ষের আপত্তিকর কথোপকথন ও কলেজ প্রশাসন কর্তৃক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।


 


রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে নওগাঁ সরকারি কলেজ চত্বরে কলেজের শিক্ষার্থী ও জুলাই যোদ্ধা সংসদ, আহত ও শহীদদের পরিবারের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়।


 


জানা যায়- কলেজের ছাত্রীদের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোসহ অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুল হকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ছাত্রীদের ওড়না ছাড়াসহ বিভিন্ন সাজে দেখার আবদার করেন তিনি। এতে নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করায় ফুঁসে উঠেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


 


গতকাল সকালে কলেজের গেটে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোর স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে মানববন্ধন করা হয়।


 


বিষয়টি যাচাই সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


 


মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- নওগাঁ জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন, শিক্ষার্থী সাদনান সাকিব, শহীদ ফাহমিনের মা কাজী লুলুন মাখমিম (শিল্পী), কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুন ও শিক্ষার্থীর বাবা গোলাম রসুলসহ অন্যরা।


 


মানববন্ধনে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।


 


বক্তারা বলেন- নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুল হক, যিনি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নারী শিক্ষার্থীদের সাথে আপত্তিকর কথোপকথন করাসহ এবং ওড়না ছাড়া ছবি দেওয়ার জন্য বলেন। এসব বিষয় কাউকে জানানো হলে কৌশলে তাদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। সম্প্রতি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর কথোপকথন ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও কোনো শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে কলেজ প্রশাসন দিয়ে মারধর করা হয়। এছাড়া কলেজে ভর্তিসহ বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়।


 


এসময়, কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সহ অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি জানানো হয়।


 


ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন বলেন, "একজন অধ্যক্ষ হয়ে কীভাবে তিনি ছাত্রীদের সাথে কুচুরিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন। কীভাবে ছাত্রীর কাছ থেকে ওড়না ছাড়া ছবি চাইতে পারেন। এমন অধ্যক্ষের কাছে কীভাবে ছাত্রীরা নিরাপদ হতে পারে। কলেজে ছাত্রদের জন্য আবাসিক (হল) ও ক্যান্টিনের ব্যবস্থা নেই। অনেকবার বলার পরও তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। কেন শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে যায় না বা কলেজে আসে না সে বিষয় নিয়ে তিনি কখনো ভাবেননি। তিনি শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে পারেননি। অর্থ কীভাবে আত্মসাৎ করা যায় তা নিয়ে ভাবেন। আপত্তিকর মন্তব্য করায় অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি করছি।"


 


জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন- "কলেজের উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। কলেজের কী উন্নয়ন হচ্ছে যার কোনো দৃশ্যমান নেই। অধ্যক্ষ কলেজে মাস্তান বাহিনী পুষে রেখেছেন। প্রায় কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। দিনের পর দিন কোনো শিক্ষার্থী ভয়ে প্রতিবাদের সাহস পায় না।"


 


এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুল হক এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।


শেয়ার করুন