রাজউক আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে। অন্য কোন আইনের যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো এলাকার নিচু ভূমি ভরাট, বা উচু করা বা অন্য কোনে উপায়ে যে কোন নদ-নদী,ভাল, বিল,পানিধারা,পুকুর এবং ডোবার পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা যাবে না। বিদ্যমান আইন, বিএনবিসি, মোবাইল কোর্ট আইন ও পানিধারা করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে একটি অপরাধ ও এ জন্য ৭ বছরের কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের দন্ডিত হবে এমন বিধান যুক্ত করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আইন, ২০২৩ সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি, নারায়নগঞ্জ সিটি ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার পৌনসভা, কালীগঞ্জ পৌরসভা, তারাব পৌরসভা এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা নতুন আইনে যুক্ত করে রাজউকের আয়েতন বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগরী গড়ার জন্য রাজধানীর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সমন্বয় করতে আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। এ সংশোধিত আইনে ৯টি অধ্যায়, ১০৮টি ধারা এবং ২৯টি সংজ্ঞা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি নতুন সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত, রাজধানীর উন্নয়ন কৃর্তপক্ষ আইন-২০২৩ সংশোধনী প্রস্তবনায় বলা হয়, টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩-এ ব্যাপক পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন আইন।এটি ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২২ নামে প্রস্তাব করা হয়। বিদ্যমান আইনে একটি অধ্যায় ও ১৪টি সংজ্ঞা যুক্ত হচ্ছে এবং ৩১টি ধারা বাতিল করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের পাঁচজন সদস্যের জায়গায় সাতজন করা হচ্ছে। নতুন আইনে ড্যাপ, বিএনবিসি, মোবাইল কোর্ট আইন, পানিধার সংরক্ষণ আইন যুক্ত করা হচ্ছে। এ আইন পাস হলে রাজউক চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কমপক্ষে দুই বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। সেই সঙ্গে চেয়ারম্যান পদটিও গ্রেড-১ পদমর্যাদার হবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী অতিরিক্ত সচিব রাজউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। এর আগে সার-সংক্ষেপে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৮ জুন মন্ত্রিসভা কমিটির পত্রে সামরিক শাসন আমলে জারি করা অধ্যাদেশগুলোকে আইন আকারে প্রণয়ন এবং ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ইংরেজিতে থাকা আইনগুলো বাংলা ভাষায় প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মতে আইনটি সংশোধনসহ বাংলায় করা হচ্ছে। সর্বশেষ প্রায় ৩২ বছর আগে ১৯৯১ সালে আইনটির আংশিক সংশোধন করেছিল সরকার। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২৩-এর সার-সংক্ষেপ সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
রাস্তার সীমানারেখা এবং ইমরারত রেখার মাঝখানে নির্মাণ করিলে দন্ডের বিধান : কোনো ব্যক্তি অনুমোতি ব্যতীত কোনো রাস্তা বা খোলা চত্বরের সীমানারেখা বা ইমারত রেখায় নির্মিত কোন দেয়া, ইমারত কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতো অপসারণ না করল তা অপরাধ বলে গন্য হবে এবং এ জন্য পাকা ইমারত বা দেয়া অপসারণ না করিলে ৫ লাখ টাকা এবং ২ বছর মাস কারাদন্ড, কুড়ে ঘরে জন্য ২ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে এবং অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রতিদিনের জন্য পাঁকা ইমারত বা দেয়ালের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা এবং কুঁড়ে ঘরের জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করতে হবে।
মহাপরিকল্পনা/ অঞ্চল পরিকল্পনা লঙ্ঘনের দন্ড: কোনো ব্যক্তি মহাপরিকল্পনা-বিশদঅঞ্চল পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত কোনো ভূমি উক্ত পরিকল্পনার উল্লিখিত উদ্দেশ্য ব্যতিত অন্য কোনো উদ্দেশ্য ব্যবহার করিলে উহা একটি অপরাধ এবং এ জন্য ৭ বছরের কারাদন্ড অথবা ১০ লাখ টাকার অর্থদন্ডে দন্ডিত হইবে এবং অপরাধ অব্যহত থাকলে প্রতিদিন ১ হাজার করে টাকা জরিমানা প্রদান করতে হবে।
নিচু ভূমি ভরাট ও পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত অপরাধ: কোন আইনের যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো এলাকার নিচু ভূমি ভরাট, বা উচু করা বা অন্য কোনে উপায়ে যে কোন নদ-নদী,ভাল, বিল, পানিধারা,পুকুর এবং ডোবার পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে একটি অপরাধ ও এ জন্য ৭ বছরের কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের দন্ডিত হবে।
অননুমোদিত নির্মাণ অপসারণ: যদি আদালত কোন ব্যক্তিকে কোন দেয়াল- ইমারত-স্থাপনা অবসারণের আদেশ প্রদান করে উক্ত ব্যক্তি যদি আদালতের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত দেয়া-ইমারত বা স্থাপনা অপসারণ না করে তা হলে কর্তৃপক্ষ উহা অপসারণ করিতে পারবে। অপসারণের জন্য ব্যয়িত অর্থ সরকারি দাবী হিসেবে উক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে আদায়যোগ্য হবে।
অপরাধের আমলযোগ্যতা, আপোষযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা: এই আইনে অপরাধের আমলযোগ্যতা, আপোষযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা হবে।
দন্ডের আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা: ফৌজদারী কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন প্রথম শ্রেনীর জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই আইনের অধীনে দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোন দন্ড আরোপ করিতে পারিবেন। সরকার কর্তৃক মোবাইল আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধসগুলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোট আইন,২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) অনুযায়ী বিচার করতে পারবেন।