বিগত প্রায় দেড় মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতরে সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১২ হাজার। এই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় প্রায় ১৩ শ গণহত্যা চালিয়েছে। গতকাল শুক্রবার গাজা প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩০ হাজার। বার্তা সংস্থা এএফপি ও আনাদোলু এজেন্সির পৃথক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার জনসংযোগ বিভাগ বিবৃতিতে নিহতের সংখ্যা ১২ ছাড়িয়েছে উল্লেখ করে বলেছে, ‘নিহতদের মধ্যে ৫ হাজারের বেশি শিশু এবং ৩ হাজার ৩০০ নারী। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩০ হাজার।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৫০ জন নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে আবার ১ হাজার ৮ শতাধিক শিশু।’
গাজার জনসংযোগ অফিস জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী অন্তত ১ হাজার ২৭০টি গণহত্যা চালিয়েছে।’ তাঁরা আরও জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ২০০ চিকিৎসাকর্মী, ২২ জন সিভিল ডিফেন্স সদস্য এবং ৫১ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে।’ এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় গাজার ২৫টি হাসপাতাল, ৫২ টি বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র কার্যক্রম চালানোর অনুপযোগী হয়ে গেছে। এর বাইরে ৫৫টি অ্যাম্বুলেন্সও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ বিভাগ।
এদিকে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত থেমে যাওয়ার পর একটি শক্তিশালী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনেই গাজায় বসবাস চালিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমাধানকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াসে আজ শুক্রবার এই অঞ্চলটিতে সফর করেছেন বোরেল।
রামাল্লায় ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ স্তাইয়েহের সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে বোরেল বলেন, ‘গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোর করে উচ্ছেদ, স্থানান্তর কিংবা ইসরায়েল দ্বারা অধিগ্রহণ বা হামাসের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে না গাজা।’ এ সময় গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান ইইউ-এর শীর্ষ কূটনীতিক। এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আপনার আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন প্রয়োজন হবে। কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজায় ফিরে যেতে হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে চার দিনের সফরের শুরুতে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলে অবতরণ করেন স্প্যানিশ রাজনীতিবিদ বোরেল। এই সফরে ফিলিস্তিনি অঞ্চল ছাড়াও বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতার এবং জর্ডান সফর করবেন তিনি।