আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। অভিনয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই জড়িত তিনি। দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনেও যোগ দিয়েছিলেন ফেরদৌস। এই অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন নাজমুল হক নাঈম।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১০ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। আপনার অনুভূতি কী?
আলহামদুলিল্লাহ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁর প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ আমার মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান, বন্ধু, সহশিল্পী, মিডিয়াকর্মীদের। তাঁরা সারা জীবন আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। কাল (আজ) থেকে আমার নতুন জীবন শুরু হচ্ছে। আমার বিশ্বাস, এবারও তাঁরা সাপোর্ট করবেন, আমার সঙ্গে থাকবেন।
কোন ভাবনা থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন?
আমি দুই যুগ ধরে নানা ধরনের সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। আমি মনে করেছি, আমার একটা জায়গা প্রয়োজন, যেখান থেকে মানুষের পাশে আরও ঘনিষ্ঠভাবে দাঁড়াতে পারব, মানুষের জন্য আরও কাজ করতে পারব। কিছুদিন আগে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তিনি আমাকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। শুধু আমাকে নয়, সব শিল্পীকেই তিনি স্নেহ করেন। সেই স্নেহের জায়গা থেকেই আমার ইচ্ছার কথা তাঁকে জানাই। উনি তখন হেসে বলেছিলেন, দেখবেন। সেই জায়গা থেকে আমি মনোনয়ন ফরম কিনি। কিন্তু আমাকে যে এত বড় আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে এটা স্বপ্নেও ভাবিনি।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারলে আপনার লক্ষ্য কী হবে?
প্রধানমন্ত্রীর ভিশনই আমাদের ভিশন। তাঁর দিকনির্দেশনায় কাজ করতে চাই। আমারও কিছু পরিকল্পনা আছে। সেগুলো বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
সেগুলো নিয়ে যদি কিছু বলেন?
এলাকার রুটিন কাজের বাইরে আমি শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ দেশের শিক্ষা আরও কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সেসব বিষয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।
চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?
আমি সব সময়ই বলে এসেছি, আমি আগে নায়ক ফেরদৌস। এরপর অন্য পরিচয়। চলচ্চিত্র পরিবারই আমার সবচেয়ে আপন। যত মানুষ আমাকে চেনে, চলচ্চিত্রের জন্যই চেনে। তাই চলচ্চিত্রের জন্য যখন যে কাজে আমাকে প্রয়োজন হবে, আমি পাশে আছি, পাশে থাকব।
চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার পরিকল্পনাগুলো বলুন?
চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সব সময় যোগাযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর আগ্রহ আমাদের চেয়েও বেশি। তাঁর কাছ থেকে আমরা কখনো খালি হাতে ফিরিনি। তাই আশা রাখি চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নে আমার যেকোনো ভূমিকায় তাঁকে পাশে পাব। একজন চলচ্চিত্রকর্মী হিসেবে বাংলা সিনেমাকে বিশ্বের দরবারে আরও উচ্চস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।
বিশ্বব্যাপী এখন বাংলা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সঙ্গে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও বাংলা সিনেমা ভালো অবস্থান তৈরি করেছে। অনেকে মনে করেন
প্রক্রিয়াগুলো এখনো অনেক জটিল। বিষয়গুলোতে আপনার নজর পড়বে কি?
আমার অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ দেশের মতোই বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। সঙ্গে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু বাংলা সিনেমা বিশ্বব্যাপী ভালো ব্যবসা করেছে। অবশ্যই বিষয়গুলোতে আমার নজর থাকবে। তবে সেই সঙ্গে আমাদের কিন্তু বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। মুক্তবাজারে পণ্যের গুণগতমান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে কি পর্দায় আপনাকে আর আগের মতো পাওয়া যাবে না?
এমনিতেই কয়েক বছর যাবৎ আমি বেছে বেছে কাজ করছি। গত কয়েক বছরে দেশপ্রেম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্পের সিনেমায় বেশি অভিনয় করেছি। একজন অভিনেতা হিসেবে সেসব কাজের পাশে থাকা আমি আমার বড় দায়িত্ব বলে মনে করি। এমপি হলেও পর্দায় আমাকে আগের মতোই দেখা যাবে। আগেই তো বললাম, আমার প্রথম পরিচয়, আমি নায়ক।
আপনার বাবার জন্মভিটা কুমিল্লায়, আপনার বাবার প্রতিষ্ঠিত কাপাশকান্দি মডেল একাডেমির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আপনি। সেখানকার মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ বা পরিকল্পনা আছে?
অবশ্যই আছে। গত মে মাসে বাবার প্রতিষ্ঠিত স্কুলে গিয়েছিলাম। সবার ইচ্ছাতে বিদ্যালয়টির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছি। এলাকার উন্নয়নের জন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আপডেট করা খুব প্রয়োজন। এ জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। আমি মাঝে মাঝে সেখানে যাব, এলাকা এবং স্কুলের স্বার্থে সব সময় পাশে আছি, থাকব।