বায়ুদূষণ রোধে নেয়া বেস্ট প্রকল্পকে সবচেয়ে সফল প্রকল্পে পরিণত করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, বায়ুদূষণ কমাতে শুধু প্রকল্পের আশায় বসে থাকলে চলবে না। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় দরকার হলে সরকারি অর্থে বায়ুদূষণ রোধে কাজ করতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরে ‘এনভায়রনমেন্টাল
সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন’ প্রকল্প বিষয়ে আয়োজিত এক পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জনগণের অর্থে নেয়া প্রকল্পের টাকা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে নজর আরো বাড়ানোর কথা জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। দেশে দূষণ রোধে প্রকল্পের গুণগত লক্ষ্য যাতে অর্জিত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এ প্রকল্পকে সফল করতে প্রকল্পের চারটি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নকারী পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিআরটিএ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটিকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
কর্মশালার সভাপতি পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, দেশের পরিবেশের উন্নয়নে বেস্ট প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। দেশের পরিবেশের মানোন্নয়নে এ প্রকল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করে সবাইকে নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে।
কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, বিশ্বব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন, এজেন্স ফ্রাঙ্কেস ডি ডেভেলপমেন্টের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কর্টেস প্রমুখ।
কর্মশালায় বেস্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মঞ্জুর আলম প্রধান পরিবেশগত শাসন ও ব্যবস্থাপনা শীর্ষক প্রকল্পের কম্পোনেন্ট-১ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে বিভাগীয়, জেলা কার্যালয়, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র, এনভায়রনমেন্টাল সেন্টার অব এক্সিলেন্স নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, মনিটরিং যানবাহন এবং মনিটরিং ভেসেল চালু করা হবে। কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার, বিভাগীয় ল্যাব ও জেলা ল্যাব সজ্জিত করা হবে। সিএএমএস এবং জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও রিমোট সেন্সিং (আরএস) এ ইন্টিগ্রেটেড হেভি মেটাল মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। পরিবেশগত পর্যবেক্ষণ ও বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণ সিস্টেম পেশাদার ড্রোন প্রযুক্তি স্থাপন করা হবে। সম্ভাব্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে গ্রীন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম (জিসিজিএস) চালু করা হবে। যানবাহন দূষণ মনিটরিংয়ের সব সুবিধাসহ ৪টি যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ই-ওয়েস্ট রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি ইনস্টলেশন এবং অপারেশন উপস্থাপন করা হবে। বায়ুদূষণ রোধে প্রকল্পটিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে গাড়ির কালো ধোঁয়া কমানো। ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও নজর দেয়া হয়েছে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব ইটনির্মাণ, ছাদে সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রণোদনারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কর্মশালায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং ফলাফল, বাস্তবায়নকারী সংস্থা, স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সমন্বয় ও প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ এবং অগ্রগতির উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। উপস্থিত স্টেকহোল্ডাররা বেস্ট প্রকল্পের বাস্তবায়নে তাদের সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।