রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েই সাংবাদিক পেটালেন আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব আলী মন্ডল। ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার তৃতীয় দিনে তিনি দৈনিক সানশাইনের অনলাইন ভার্সনের সম্পাদক আসাদুল্লাহ গালিবকে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে গিয়ে দলীয় কার্যালয়ে মারপিট করেন। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারে গেলে তার পিতা হেলাল উদ্দিন তালুকদারের উপরও হামলা করে মারপিট করা হয়।
বুধবার রাত ৮ টার দিকে এ হামলায় আহত সাংবাদিক আসাদুল্লাহ গালিব রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ক সম্পাদক হিসেব দায়িত্বে আছেন। তার পিতা হেলাল উদ্দিন একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর পারিলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
আহত গালিব জানান, সোহরাব আলীর বিভিন্ন কুকৃর্তী নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে তিনি ক্ষুদ্ধ হন। ফলে সভাপতি হওয়ার তৃতীয় দিনেই সাংবাদিকের উপর হামলা করে সেই শোধ নিলেন।
তিনি বলেন, গত ১৬ জুন পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ফাহিমা বেগম নামে এক নেত্রী রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেই সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইনে প্রকাশ হওয়ার জের ধরেই মূলত তার উপর হামলা করা হয়। হামলায় সরাসরি অংশ নেন সোহরাবের ভাই কামরুল, আসাদুল, ছেলে সৌমিকসহ তার অনুসারীরা। হাটের মধ্যে শতশত লোকজনের সামনে তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান।
গালিব বলেন, হামলার আগে আসাদুল ও সম্রাট তার দুই হাত চেপে ধরে টেনে হিচড়ে পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে যায়। আগে থেকে সোহরাব সেখানে ছিলেন। আওয়ামী লীগ অফিসের ভিতরেই আমাকে মারধর করেন সকলে মিলে। খবর পেয়ে আমার আব্বা আমাকে বাঁচাতে গেলে তার উপরেও হামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গালিব বলেন, আমাকে মারারা সময় সোহরাব ও তার ছেলে উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলছিল খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র তোর বাপ হয় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিস। এখন ঢাক তোর বাপ মেয়রকে দেখিকে আগাতে আসে কিনা। এ সময় মেয়রকে গালিগালাজ করে আর আমাকে মারপিট করে।
তিনি আরও জানান, গোরস্থানের জমি গোপণে অন্যের কাছে বিক্রির সময় স্থানীয় জনগণের তোপের মুখে পড়ার সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রচারিত হলে সে সময় তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর টাকা নিয়ে শোধ না করার ঘটনা খুব স্বাভাবিক বিষয় তার কাছে। কয়েক বছরের মধ্যে সামান্য ব্যবসায়ী থেকে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ করেছেন রাজনীতির পদ বাগিয়ে। এসব বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রচারের কারণে আমার উপর এ হামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব আলীকে পাওয়া যায়নি।
তবে পবা থানার ওসি ফরিদ হোসেন জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত করে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।