চাঁদার দাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হওয়ার খবরে যখন তোলপাড় ঠিক তখনই বন্দরের শত কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজে ঘাপলার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষ ও সাব ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বন্দর নির্মাণে অধিগ্রহণ করা জমির মালিকদের কাজ দেওয়াসহ তাদের পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করা নিয়ে বিরোধে বেরিয়ে আসতে শুর করেছে ঘাপলার এসব তথ্য। এ নিয়ে শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে বিভিন্ন সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিপুল অর্থ লোপাটের সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরেন নেতারা। প্রধান প্রকৌশলীর ভাইয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ করেন তারা। বন্দর কর্মকর্তারা অবশ্য এসব অভিযোগ স্বীকার করেননি। চাঁদাবাজির অভিযোগ ঢাকতে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
চাঁদার দাবিতে হামলা ও ভাঙচুরের মুখে ১ম টার্মিনাল নির্মাণ বন্ধ হয়ে গেছে বলে ৩ মার্চ বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক দুটি অভিযোগ করে এবিএম ওয়াটার কোম্পানি এবং ওয়াটার বার্ডস্ লিমিটেড নামে দুই প্রতিষ্ঠান। মূল ঠিকাদার চায়না প্রতিষ্ঠান এসএসআইসি এবং সিআরসির উপঠিকাদার হিসাবে কাজ করে এরা। অভিযোগে ১ মার্চ শুক্রবার ৩০টি মোটরসাইকেলে আসা ৭০-৮০ জন হামলা করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম ওই দুটি অভিযোগ করেন চেয়ারম্যানের কাছে। অনৈতিক আর্থিক সুবিধার দাবিতে লোকজনকে মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে দাবি তার। অভিযোগে জাহিদুল হামলাকারীদের পরিচয় না দিলেও তারা কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানের মালিক হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদারের নেতৃত্বে ওই হামলা হয়েছে। ছাত্রলীগ এখান থেকে প্রতি মাসে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা চাইছে। যদিও এ অভিযোগ স্বীকার করেননি আশিক। নির্মাণে তাদের বিপুল আয়তনের পৈতৃক সম্পত্তি অধিগ্রহণ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের চাকরি ও কাজ দেওয়াসহ সহায়তার। কিন্তু এখানের কর্মকর্তারা তা না করে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে চাকরি ও কাজ দিচ্ছেন। সে ব্যাপারে কথা বলার জন্য গেলে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। নিজেদের অন্যায় ঢাকার জন্য ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিষয়টিকে ঘোলাটে করা হচ্ছে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি পুলিশ সুপার, স্থানীয় থানা ও নেতাদের তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছি। তবে বন্দরের উন্নয়ন কাজ একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি।