১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৭:২৮:৪৭ অপরাহ্ন
ঈদে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়তি সতর্কতা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৪-২০২৪
ঈদে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়তি সতর্কতা

ঈদ উপলক্ষ্যে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার যাত্রীরা গ্রামের বাড়ি ছুটছেন নাড়ির টানে। এবারের ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনার শঙ্কা বেড়েছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে। হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে ১৩৫ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৩১ জনের। আহত হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ। মূলত যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত গতি, লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, ফিটনেস ছাড়া গাড়ি ও হেলমেটহীন দ্রুতগতির মোটরসাইকেল চলাচলসহ ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে মানুষের অনীহার কারণেই দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা এড়াতে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ।


সরেজমিন শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে দেখা যায়, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে স্পিডগানের মাধ্যমে যানবাহনের গতি মনিটরিং করছে হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ। এছাড়া দুর্ঘটনাসহ সড়কে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা রোধে একাধিক স্থানে সিসিটিভি বসিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে এক্সপ্রেসওয়েতে ৬টি পয়েন্টে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।


এদিকে এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়মিত এমন দুর্ঘটনায় এবার ঈদযাত্রায় আতঙ্ক বেড়েছে এই পথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের। অনেকের অভিযোগ, শৃঙ্খলা মেনে যানবাহন না চলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা।


রমজান বেপারী, সবুজ মিয়া, সাত্তার কাজী, আকবর হোসেনসহ কয়েকজন যাত্রী বলেন, প্রায়ই মহাসড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। তবু যানবাহনচালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাসচালকদের সীমিত গতিতে গাড়ি চালাতে বললে বা ওভার ট্রেকিং করতে বাধা দিলে তারা চড়াও হয় আমাদের মতো যাত্রীদের ওপর। এসব বিষয়ে একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযোগ করেছি; কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলে ঈদযাত্রা নিরাপদ হবে।


এদিকে ঈদে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব জানিয়েছেন হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাঞ্চন কুমার সিংহ। তিনি বলেন, ঈদে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। মহাসড়কে এলোমেলো মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা হয় সবচেয়ে বেশি। যদি ঈদে মূল সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং পাশের সার্ভিস লাইনে চলাচল করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে দুর্ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।


তিনি আরও জানান, মহাসড়কে নির্ধারিত যে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ রয়েছে যদি কোনো যানবাহন এটি অতিক্রম করে, তাহলে তাৎক্ষণিক মামলা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মোটরসাইকেলের গতি ও হেলমেটহীন চালকদের কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবু চেষ্টা থাকবে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্নভাবে মনিটরিং করা হলেও যানবাহনচালকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি না হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে।


পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাদা পোশাকেসহ দুই শতাধিকের বেশি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য পদ্মা সেতুর পাশে আলাদা লেন করে দেওয়া হয়েছে।


জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন বলেন, ঢাকা-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের অংশে ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু উত্তর থানা কর্তৃপক্ষসহ হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে নিয়োজিত আছেন। জেলা গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই বন্ধে নজরদারি বাড়িয়েছে। কোনো চালক আইন অমান্য করলে তাৎক্ষণিক মামলা দেওয়াসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একাধিক পয়েন্টে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।


শেয়ার করুন