চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা বিবেচনা করে সারা দেশের বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০-এর পর্যায়ে আছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বাংলাদেশে নতুন নয়। এখন সবকিছু খোলা থাকবে আর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, এই প্রত্যাশাটি যথাযথ নয়। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের তাপমাত্রা সারা দেশের তাপমাত্রা নয়। তবে কোনো জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে ওইদিন সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনা করে সেই জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। মাধ্যমিকের ক্লাস শনিবারেও বন্ধ না রাখার ঘোষণার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্কুল খোলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিভাবকরা আলোচনা-সমালোচনা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জন করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কারিকুলামের কাজ চলছে। তাই বাস্তবতার নিরিখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা যদি অসহনীয় পর্যায়ে যায় তাহলে বিদ্যালয় সেখানে নিজস্ব পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু আমরা এমনও দেখছি, বিভাগীয় শহরে কিছু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্কুলও বন্ধ করে দিয়েছে অভিভাবকদের চাপে।
শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে জোর দিতে হবে : জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ করতে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর চেয়ে যথাযথভাবে বাজেট খরচ করার বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে পাঠ্যক্রম নিয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষা খাতে যে বাজেট তা ২০০৬ সালের সমগ্র বাংলাদেশের বাজেটের সমান। দেশ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ অর্থ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চেয়েছি জ্ঞানের প্রায়োগিক বিষয়কে গুরুত্ব দিতে। দক্ষতা এবং মূল্যবোধ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের একটা শ্রেণি মূল্যবোধ প্রশ্নে নিজেদের ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এমন একটা ব্যবস্থায় তারা আছে, যেখানে জ্ঞানেরও আলোচনা নেই, দক্ষতারও আলোচনা নেই।
বাকবিশিসের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বাকবিশিসের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর, প্রেসিডেন্ট মেম্বার ড. আজিজুর রহমান, শিক্ষাবিদ মাহফুজা খানম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক মঞ্জুর আহমেদ প্রমুখ।