আজ শনিবার থেকে রেলযাত্রায় রেয়াতি সুবিধা উঠে যাচ্ছে। এর ফলে দূরের যাত্রীদের ওপর চাপছে বাড়তি ভাড়ার বোঝা। নতুন দামে টিকিট কেটে ক্ষোভ ঝেড়েছেন দূরের যাত্রীরা।
এক যাত্রী ক্ষোভের সুরে বলেন, বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়ছে। মানুষের ওপর জুলুম হচ্ছে। আবার এদিকে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পায় না।
আরেক যাত্রী বলেন, ট্রেনের যাত্রীসেবা তো অনেক দূরের বিষয়। এটি আশা করছি না। কোনোরকম গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলেই আমরা খুশি।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, রেলের যাত্রীরা ১০১ থেকে আড়াইশ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২৫ শতাংশ এবং এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় পেতেন। সেই বিধান উঠে যাওয়ায় বর্তমানে গন্তব্যভেদে ২০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত শোভন চেয়ারের টিকিটের দাম বেড়েছে। এসি চেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩০০ এবং কেবিনের ভাড়া বেড়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে আগের ভাড়া পুনর্বহালের দাবি যাত্রীদের। একজন যাত্রী বললেন, রেলের ভাড়া বাড়লে তা নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাহিরে চলে যাবে। ভাড়া বাড়ার পাশাপাশি রেলের সেবা বৃদ্ধিরও দাবি যাত্রীদের।
রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী জানালেন, রেলের লোকসান কমাতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যথায় রেলসেবার মান উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে হচ্ছে। এই সুবিধা প্রত্যাহারের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটির প্রভাব সকল যাত্রীর ওপর পড়বে।
এদিকে, রেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মোট ভাড়ার ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রভাব পড়বে। কিন্তু নীতিনির্ধারকরা বলার চেষ্টা করছেন রেলের ভাড়া বাড়ছে না। আসলে রেলের ভাড়া বাড়ছে। এটির প্রভাব সাধারণ জনগণের ওপর পড়বে।
গণপরিবহণ হিসেবে রেলের এই সুবিধা বহাল রাখা উচিত বলেও মনে করেন তারা। এখনো উন্নত বিশ্বে ট্রেন ভ্রমণে যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।