১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৫:২০:৫৬ অপরাহ্ন
৯ ঘণ্টা থানায় থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করলেন রাবি শিক্ষকরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৮-২০২৪
৯ ঘণ্টা থানায় থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করলেন রাবি শিক্ষকরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করে নগরীর দুই থানা পুলিশ। শিক্ষার্থী আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে তাদের ছাড়াতে থানায় ছুটে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা। আটকদের না ছাড়া পর্যন্ত ফিরে যাবেন না বলে জানান তারা।


অবশেষে বুধবার (৩১ জুলাই) রাত ১টার দিকে নগরীর মতিহার থানা থেকে আটক তিন শিক্ষার্থীকে প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা পর ছাড়াতে সক্ষম হন শিক্ষকরা। এসময় বাকিদের মুক্ত করতে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা।



খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আদালতের প্রধান ফটকের সামনে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেন। তবে পথে পুলিশের বাধার কথা চিন্তা করে তারা কর্মসূচি পরিবর্তন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করার ঘোষণা দেন। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসার পথে দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সামনে থেকে ও একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে আটক করে মতিহার থানা পুলিশ।


আটকরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সৈয়দ সামিউল বাসিত, মাজেদ হাসান এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম। শিক্ষকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।



এদিকে শিক্ষার্থীদের রাজশাহী কোর্টের প্রধান ফটকের সামনে ডাকা কর্মসূচির কারণে কোর্ট এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে আন্দোলনকারীরা নির্ধারিত স্থানে ভিড়তে পারেননি। দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী কোর্ট এলাকার রাজশাহী দারুস সালাম কামিল মাদরাসার গলিতে ১২ থেকে ১৫ জন যুবক পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও ৫ রাউন্ড শটগান মেরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে এলোমেলোভাবে কয়েকজন কোর্ট এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের আটক করে পুলিশ। নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ এই এলাকা থেকে ১০ শিক্ষার্থীকে আটক করে। তাদের মধ্যে দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।


বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরের মহিষবাথান এলাকা থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হাসান এবং আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রত্যয়কে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে, প্রত্যয়কে রাজপাড়া থানা পুলিশ ও রিফাত হাসানকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। তাদের ছাড়াতেও শিক্ষকরা বিকেলে থানায় উপস্থিত হন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের ছাড়া হয়নি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. আমীরুল ইসলাম কনক বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আটক করার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক মতিহার থানায় ছুটে যাই। আসলে শিক্ষার্থীদের ভুলটা কোথায়? কিসের জন্য তারা তাদেরকে আটক করেছে। শিক্ষার্থীরা অধিকার আদায়ের জন্য কথা বলছে। দুই-তিন ঘণ্টা অবস্থান করার পর আমরা তাদেরকে মুক্ত করি। আমরা এখনো বেঁচে আছি। আমি শিক্ষকদের বলবো, এখনো সময় আছে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান।


শেয়ার করুন