১৫ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:৩৭:১৪ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৪-২০২৫
বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যকার যাত্রী, ব্যক্তিগত এবং পণ্যবাহী যান চলাচল প্রটোকলের খসড়া অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে। এ সংক্রান্ত মোটরযান চুক্তি (এমভিএ) স্বাক্ষরিত হওয়ার দীর্ঘ এক দশক পর এই খসড়া চূড়ান্ত হলো। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের উদ্যোগ এটাই প্রথম। শুধু মোটরযান চুক্তিই নয়, বিবিআইএন দেশগুলো আঞ্চলিক জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য আন্তঃসংযুক্ত গ্রিড গড়ে তোলার কথাও ভাবছে। খবর কাঠমান্ডু পোস্টের।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিবিআইএন–এমভিএর লক্ষ্য হলো— যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের মাধ্যমে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ জোরদার করার ক্ষেত্রে বাধা দূর করা।


বিবিআইএন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) উপআঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো। তবে এই কাঠামো এখনো সুপ্ত। ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বৈরিতার কারণে সার্ক এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কোনো শীর্ষ সম্মেলন করতে পারেনি।


কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, সম্প্রতি ভারতের বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা বাতিল করার সিদ্ধান্ত এই চার দেশের মধ্যে এমভিএ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।


বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী, ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী, ভারতের সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক এবং নৌপরিবহণমন্ত্রী এবং নেপালের ভৌত অবকাঠামো ও পরিবহণমন্ত্রী ২০১৫ সালের ১৫ জুন ভুটানের থিম্পুতে বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেন।


এটি কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। এ চুক্তি দেশগুলোর ভূখণ্ডের মধ্যে দ্রুত ও সুলভে পণ্য ও মানুষ যাতায়াতে সহায়তা করবে। প্রটোকলটির আওতায় একটি পাইলট প্রকল্প চালুর কথাও বলা হয়েছে।


ভুটান ছাড়া অন্য তিন দেশ সব ধরনের যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেবে। পণ্যবাহী যানবাহনের চলাচল অনুমোদনের অধীনে হালকা বাণিজ্যিক যানবাহন (৭ হাজার ৫০০ কেজি পর্যন্ত), মাঝারি বাণিজ্যিক যানবাহন (৭ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার কেজি) এবং ভারি বাণিজ্যিক যানবাহন (১২ হাজার কেজির বেশি)—এ তিনটি শ্রেণি চালু করা হবে।


প্রটোকল চূড়ান্ত করার জন্য ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পরীক্ষামূলক চলাচল (ট্রায়াল রান) অনুষ্ঠিত হয়।


এতে যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যানবাহনের মসৃণ চলাচল সম্ভব বলেই প্রতীয়মান হয়।


২০১৫ সালের নভেম্বরে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা রুটে (৬০০ কিলোমিটার) পণ্যবাহী যানবাহনের পরীক্ষামূলক চলাচল; ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে (১ হাজার ৭৮০ কিলোমিটার) এবং ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে ভারত হয়ে কাঠমান্ডু পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস পরীক্ষামূলক চলাচল করে।


এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির মতে, প্রস্তাবিত পরীক্ষামূলক রুটের মধ্যে রয়েছে নেপাল ও ভারতের মধ্যে কাঠমান্ডু-ভৈরব-সুনৌলি-লক্ষ্ণৌ-কানপুর-নয়াদিল্লি এবং কাঠমান্ডু-বীরগঞ্জ-রাক্সৌল-কলকাতা। নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পরীক্ষামূলক রুট হিসেবে কাঠমান্ডু–কাঁকরভিটা–পানিতানকি–শিলিগুঁড়ি–ফুলবাড়ী–বাংলাবান্ধা–মোংলা/চট্টগ্রাম রুট প্রস্তাব করা হয়েছে।


সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্মকর্তারা ২০২২ সালের মার্চ মাসে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করেন এবং মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সম্মত হন। সেই সঙ্গে তারা আরও পরীক্ষামূলক চলাচল আয়োজনের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি এডিবির কাছে সেই পরীক্ষামূলক চলাচলে সহায়তার অনুরোধ জানান। পরে এডিবি এমভিএর ধারণাপত্রের ভিত্তিতে একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করে।


শেয়ার করুন