১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
পাল্টা হামলায় ভারতের ২৬টি সামরিক স্থাপনায় আঘাত করে পাকিস্তান
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৫-২০২৫
পাল্টা হামলায় ভারতের ২৬টি সামরিক স্থাপনায় আঘাত করে পাকিস্তান

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী।


তিনি জানান, ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে চালানো ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’-এর মাধ্যমে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে পাকিস্তান।


রোববার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আজ আমরা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস পরিচালনার প্রেক্ষাপট ও সফল সমাপ্তি।  ৬ ও ৭ মে রাতে চালানো ভারতীয় কাপুরুষোচিত হামলায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ নিরীহ পাকিস্তানি নাগরিকদের মৃত্যু হয়।


আইএসপিআর ডিজি প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতিকে যে প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল।


তিনি বলেন, এই দুঃসময়ে জাতির একতাবদ্ধ সমর্থন, মনোবল ও প্রার্থনা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে।


পাকিস্তানি গণমাধ্যমের ভূমিকাও তিনি প্রশংসা করেন এবং উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের গণমাধ্যম যেখানে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে, সেখানে ভারতের গণমাধ্যম কেবল যুদ্ধবাজ প্রচারেই লিপ্ত ছিল।


লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, পাকিস্তান ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা করেছে। দুটি স্থানে ভারতীয় এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে এবং পাকিস্তান ৮৪টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।


তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বে আঘাত এলে জবাব হবে প্রতিশোধমূলক ও চূড়ান্ত।


তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা মানেই আগুন নিয়ে খেলা, বিশেষ করে যখন উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর। এটি হবে এক ভয়াবহ ভুল। রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য এমন বিপজ্জনক পথে না হাঁটাই শ্রেয়।


‘ভারতীয় কোনো পাইলট পাকিস্তানের হেফাজতে নেই’


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি গুজব সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি স্পষ্ট বলেন, ভারতীয় কোনো পাইলট পাকিস্তানের হেফাজতে নেই। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব।


তিনি বলেন, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সব সময় সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে কোনো আগ্রাসন বা দুঃসাহসিকতার আরও কঠিন জবাব দেওয়া হবে।


‘যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতের পক্ষ থেকেই এসেছে’


আরেক প্রশ্নের জবাবে আইএসপিআর ডিজি বলেন, পাকিস্তান কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি। বরং ভারতের পক্ষ থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল যুদ্ধবিরতির জন্য।


‘আঞ্চলিক শান্তির চাবিকাঠি কাশ্মীর’


কাশ্মীর ইস্যুতে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিরোধপূর্ণ অঞ্চল এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির প্রধান বাধা। জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং কাশ্মীরিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে এর সমাধান ছাড়া স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়।


তিনি অভিযোগ করেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।


সমুদ্র সীমান্তে পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রতিরক্ষা


পাকিস্তান নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রব নওয়াজ বলেন, সংখ্যায় শক্তিশালী শত্রুর মুখোমুখি হয়েও পাকিস্তান নৌবাহিনী সাহসিকতার সঙ্গে সমুদ্র সীমান্ত রক্ষা করেছে। আমাদের প্রস্তুতি চিরকালীন। যেকোনো সময় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া আমাদের জন্য তাৎক্ষণিক এবং অদৃশ্য।


আকাশ প্রতিরোধে পিএএফের শক্ত জবাব


এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা সময় ও স্থান অনুযায়ী আমাদের পছন্দমতো ঠিক করে জবাব দিয়েছি। আমাদের সামরিক নেতৃত্ব যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অপারেশন সম্পন্ন করেছি।


এর আগে শনিবার ভোরে পাকিস্তান ভারতের একাধিক স্থানে হামলা চালায়। এ হামলা ছিল ভারতের আগের হামলার জবাবে। ভারত পাকিস্তানের নূর খান, শোরকোট ও মুরীদ ঘাঁটিসহ তিনটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হেনেছিল।


জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ পরিচালনা করে ভারতের বহু সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করে। পাকিস্তানি জেএফ-১৭ থান্ডার জেট থেকে নিক্ষিপ্ত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে ভারতের উধমপুরে অবস্থিত এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়। যার মূল্য ছিল ১.৫ বিলিয়ন ডলার। এটি ভারতের জন্য বড় ক্ষতি।


ট্রাম্পের ঘোষণা


পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে জানান, এক রাতের দীর্ঘ আলোচনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান ও ভারত একটি পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।


শেয়ার করুন