বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডিকে জনপ্রিয় করতে এবং গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাজশাহীতে শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী ঈদ কাবাডি উৎসব। রাজশাহীর লালনশাহ মঞ্চ সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত এই বিশেষ আয়োজনের উদ্বোধন করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
উত্তরবঙ্গ কাবাডি একাডেমির আয়োজনে এবং উত্তরবঙ্গ কাবাডি ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে রাজশাহী জেলার আটটি উপজেলা থেকে একটি করে মোট আটটি দল অংশগ্রহণ করছে। কাবাডিকে ‘বাঙালির প্রাণের খেলা’ উল্লেখ করে মিলন বলেন, “এই খেলা আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমন কেউ নেই গ্রামে যে এই খেলা খেলেননি।”
শফিকুল হক মিলন আরও বলেন, “কেবল খেলোয়াড় আর আয়োজকরাই নয়, সাংবাদিকরাও এই খেলাকে সৌন্দর্যপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করে তুলতে বড় ভূমিকা রাখে।”
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর দেশের পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বসেছে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আগের কার্যকর অবস্থানে ফিরে যেতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা থাকলেও তা পূরণ হচ্ছে না। একটি অদৃশ্য শক্তি হয়তো বাধা দিচ্ছে। তবে এই অবস্থায় বেশি দিন চলবে না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
উদ্বোধনী বক্তব্যে মিলন বলেন, “ক্রীড়ার মাধ্যমে একটি দেশ বিশ্ব দরবারে সহজে পরিচিতি লাভ করে। যেমন আর্জেন্টিনা ফুটবলের মাধ্যমে সবার চেনা দেশ হয়েছে। কাবাডিও আমাদের সেই পরিচয়ের হাতিয়ার হতে পারে।”
তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং কাবাডি খেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ নেয় দুর্গাপুর উপজেলা দল এবং পুঠিয়া উপজেলা দল। পরে তিনি খেলোয়াড়দের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
মেঘনা কাবাডি ক্লাব ও একাডেমি, এডভোকেট শফিকুল হক মিলনের 'ল-এসোসিয়েট' ও 'পাইওনিয়ার ল-এসোসিয়েট'-এর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরবঙ্গ কাবাডি ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আন্তর্জাতিক কাবাডি রেফারি এস এম এ মান্নান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কামাল আজাদ সুইট, কাবাডি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম আতিকুর রহমান, কাবাডি ফেডারেশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন মজনু এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য রুবেল।
এছাড়াও আয়োজক কমিটির সদস্য, আটটি উপজেলার খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমী জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
এই কাবাডি উৎসব কেবল খেলার আয়োজন নয়, বরং বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং জাতীয় পরিচয়ের একটি চিত্র। রাজশাহীর এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন ক্রীড়াপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ জাগিয়েছে।
